ভাঙ্গা উপজেলার কৃষি প্রধান একটি ইউনিয়ন আলগী। এ ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে একটি খাল বয়ে গেছে। খালটি কুমার নদের একটি শাখা খাল। প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালের তালকান্দা ও ছোট খারদিয়া গ্রামটি খালের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। দীর্ঘদিন এ দুটি গ্রামের সংযোগস্থলে খালে খেয়া নৌকা প্রচলন ছিল।
২০০৫ সাল পর্যন্ত ওই দুই গ্রামসহ আশেপাশের ১০/১৫টি গ্রামের লোকজন এখান দিয়ে খেয়া পার হয়ে ভাঙ্গা উপজেলা শহরসহ আসে পাশের হাট বাজার, স্কুল কলেজে যাতায়াত করত। ২০০৫ এর পর খালের উপর বাশের সাঁকো তৈরি করে এলাকাবাসী। গত কয়েকবছর যাবৎ এ খালে ছিল বাঁশের সেতু। সেটিও গত বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে যায়। অবশেষে বাঁশ ও কাঠের সেতু নির্মিত হওয়ায় এলাকাবাসী খুশিতে আত্মহারা। এখন ওই এলাকায় একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবী করছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সরেজমিন সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কুমার নদের শাখা খালের পশ্চিম পাশে আলগী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ছোট খারদিয়া গ্রাম। পূর্বপাশে তালকান্দা গ্রাম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড। এই দুই ওয়ার্ডের সংযোগ সড়কে খালের উপর ৫ ফুট চওড়া ২৬৯টি কাঠের তক্তা দিয়ে এ সেতুটি নির্মিত।
এলাকাবাসী জানায়, এ খাল পার হয়ে আলগী ইউনিয়নের ছোট খারদিয়া, মানিকদী, নগরমানিকদী, ভরমানিকদী, বালিয়া, সুকনি, বিদ্যানন্দী গ্রামের লোকজন ভাঙ্গা উপজেলা শহরে যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিদিন শত শত লোক এ খাল পার হন।
ছোট খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা লিটন মিয়া (৪৫) জানান, আমাদের গ্রামের অধিকাংশ লোকের জমি খালের ওপারে তালকান্দা গ্রামের মাঠে। আমাদের দিনে বেশ কয়েকবার এ খাল পার হতে হয়। এ খাল পার হয়েই বাজার ঘাট করতে হয়। কাঠের সেতুতে আমরা অনেক খুশি।
ভাঙ্গার পীরেরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, এ সেতু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আগে ২ কিলোমিটার বেশি ঘুরে আমাদের বিদ্যালয়ে যেতে হত। এখন স্বাচ্ছন্দ্যে খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারছি।
গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর মোল্লা (৬২) জানান, এ সেতুটি ৫ ফুট চওড়া , ১৮০ ফুট চওড়া। আমাদের ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান ম. ম. ছিদ্দিক নির্বাচিত হয়েই নিজস্ব অর্থায়নে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে এ সেতুটি নির্মাণ করেছেন। ইতোমধ্যে সেতুটি চালু হয়েছে। আমরা এলাকাবাসী খুবই খুশি।
আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম.ম. ছিদ্দিক মিয়া বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতুটি নির্মাণ করি। এতে আমার প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ভবিষ্যতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের চেষ্টা করব।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর