গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঐতিহ্যবাহী খাল-বিলে মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছে স্থানীয় মৎস্য শিকারিরা। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা-উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা এ মাছ ধরার উৎসবে শামিল হন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার উপজেলার বড়ইবাড়ী গ্রামের পশ্চিমবাইদ বিলে মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠেন মৎস্য শিকারিরা। তাদের হাতে ধরা পড়ে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ।
এলাকাবাসী ও মৎস্যশিকারি সূত্রে জানা গেছে, শীতের শুরুতে খালবিলের পানি কমতে শুরু করলে কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মুরব্বিরা মাছ ধরার দিন নির্ধারণ করেন। ওই নির্ধারিত দিনে উপজেলার আষাড়িয়াবাড়ী, কুন্দাঘাটা, ডাকুরাইল, ঢোলসমুদ্র, মজুদপাড়া, বড়ইবাড়ী, কুটামনি, মেদীআগুলাই, কাঞ্চানপুর, জামালপুর এবং গাজীপুর সদর উপজেলার সালনা, পিরুজালিসহ একাধিক জেলা-উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এক থেকে দেড় হাজার মৎস্যশিকারি ওই বিলে হাজির হন। শিকারিদের মধ্যে শিশুরাও ছিল। মৎস্যশিকারি তাদের পলো, ধর্ম জাল, চাবি জাল, ঝাঁকি জাল, ঢলনা জাল, দড়িসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দলবেঁধে খালে হাজির হন। পলো দিয়ে হাঁটু থেকে বুক পানিতে একের পর এক চাপ দেওয়া আর হৈহুল্লোড় করে সামনের দিকে অঘোষিত ছন্দের তালে তালে এগিয়ে যাওয়া চিরচেনা সেই দৃশ্য দেখা যায় খালবিলে। এ উৎসবে পলো ছাড়াও ধর্ম জাল, চাবি জাল, ঝাঁকি জাল, ঢলনা জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মাছ ধরেন অনেকে। এরই ধারাবাহিতকায় বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বড়ইবাড়ী এলাকার পশ্চিমবাইদ বিলে নামেন মৎস্যশিকারি। এসময় মাছশিকারিরা হৈহুল্লোড় করে বোয়াল, মিনার কার্প, শোলসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করেন।
তরফ আলী , ইমান উদ্দিন, ইকবাল হোসেন. মোস্তাফা হোসেন সহ অনেকেই বলেন, সখের বসে আমরা মাছ ধরতে আসছি। সবার সাথে মাছ ধরতে এসে অনেক আনন্দ উপভোগ করছি। এখানে এসে অনেক মাছ পেয়েছি খুব ভাল লাগছে।
কালিয়াকৈর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সলিমুল্লাহ বলেন, মাছ ধরার উৎসব গ্রামগঞ্জের চিরচেনা ঐতিহ্য। এর আগেও মকশ বিলের অভয়াশ্রমের মাধ্যমে এভাবে মৎস্য শিকারীদের মাছ ধরাতে গেলে তাদের উঠিয়ে দেওয়া চেষ্টা করি। কিন্তু তারা কিছু শুনেন না, মানেনও না। এভাবে মাছ ধরার ধরলে কোনো আইনে না পড়ায় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। একারণে দেশীয় মাছের ক্ষতি হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু আমার খরচের টাকাও সরকার দেয় না। এছাড়া শুধু ওই মৎস্য শিকারী নয়, কল-কারখানার বর্জ্য ও পানিদূষণ কারণেও দেশীয় মাছ কমে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এএম