ভাঙ্গায় নদের এপার ও ওপারের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ শটগানের গুলি ছুড়ে এবং কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে বিকেল ৩টার দিকে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গা বাজার এলাকার কুমার নদের পূর্ব পাড়ে ভাঙ্গা পৌরসভার কাফুরিয়া সড়রদী ও হোগলাডাঙ্গী সদরদী নামে দুটি মহল্লা অবস্থিত। কুমার নদের পশ্চিম পাড়ে সোনাখোলা মহল্লা অবস্থিত। সোনাখোলা মহল্লাটি আকারে বড়। এর কিছু অংশ ভাঙ্গা পৌরসভা ও কিছু অংশ উপজেলার আলগি ইউনিয়নে অবস্থিত। মাঝে কুমার নদের উপর একটি সেতু রয়েছে।
কয়েকদিন আগে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে কাফুরিয়া সদরদী ও সোনাখোলা মহল্লার দুইদল তরুণের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সোনাখোলার ৩/৪ জন তরুণ কাফুরিয়া সদরদী মহল্লার দুই তরুণকে মারপিট করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হোগলাডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা ভাঙ্গা কাজী মাহবুব উল্লাহ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মুশফিক মৃধাকে (১৮) মারপিট করে সোনাখোলা মহল্লার লোকজন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে কাফুরিয়া সদরদী এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে সেতু পার হয়ে সোনাখোলা এলাকায় হামলা চালায়। এ সময় নজরুল শিকারী (৫৪) নামে এক চাল ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। পরে সোনাখোলার লোকজন প্রতিরোধ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র ও ইট নিয়ে পরস্পরের প্রতি নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় অন্তত আরও ৩৭জন আহত হন।
পরে ভাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শটগানের ৪৫টি গুলি, সাতটি কাঁদানে গ্যাস ও দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ফাটিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত উভয় পক্ষের লোকদের সরিয়ে দিয়ে বিকাল ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলালউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সকাল থেকে বিবাদমান দুই পক্ষ দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে দুপুর ২টার দিকে সংঘর্ষ মারাত্মক আকার ধারণ করেন। পরে পুলিশ গুলি ছুড়ে এবং কাঁদাসে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনড ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় আহতদের মাধ্যে পাঁচজনকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এরা সকলে কাফুরিয়া সদরদী এলাকার বাসিন্দা। অন্য আহতরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যারা ভর্তি রয়েছেন তারা হলেন, কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার আলী আকবর মিয়ার ছেলে রাব্বি (১৮), জাহিদ মোল্লার ছেলে তামিম মোল্লা (১৯), নূর মোহাম্মদ এর ছেলে গোলাম মওলা (১৮), হোগলাডাঙ্গী সদরদী মহল্লার জাহিদ মুন্সীর ছেলে, কাজী মাহবুব উল্লাহ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মুশফিক মুন্সী (১৮), ভাঙ্গা বাজারের মতিউর রহমানের ছেলে তিহান (১৮)।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন পক্ষ থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন