বগুড়া জেলায় ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি উপজেলা ও জেলা সদর মিলিয়ে মোট ১৩টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৩টি, দ্বিতীয় ধাপে ২টি ও তৃতীয় ধাপে আরো ২টি মসজিদ উদ্বোধন করা হচ্ছে। এছাড়াও বাকি ৬টি মসজিদের জমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আগামী অক্টোবর মাসের যে কোনো দিন দুপচাঁচিয়া ও গাবতলী উপজেলা মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।
জানা যায়, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বগুড়ায় ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ৪০ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে এসব অত্যাধুনিক তিন তলা দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ। এর মধ্যে প্রথম ধাপে শেরপুর উপজেলা মডেল মসজিদ, কাহালু উপজেলা মডেল মসজিদ ও সারিয়াকান্দি উপজেলা মডেল মসজিদের উদ্বোধন করা হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে নন্দীগ্রাম উপজেলা মডেল মসজিদ ও ধুনট উপজেলা মডেল মসজিদের উদ্বোধন করা হয়। তৃতীয় ধাপে গত ৩০ জুলাই আদমদীঘি উপজেলা মডেল মসজিদ ও সোনাতলা উপজেলা মডেল মসজিদের উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়াও বগুড়া সদর, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর, ও জেলা মডেল মসজিদের জমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
বগুড়া জেলার মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র শহরের খান্দার পাসপোর্ট অফিস ও নির্বাচন অফিসের পাশে জমি অধিগ্রহণ করে নির্মাণ করা হবে। এই মসজিদটি হবে ৪ তলা বিশিষ্ট। বাকি অন্যান্য উপজেলা মসজিদগুলো ৩ তলা বিশিষ্ট নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা মসজিদ ও সদর উপজেলা মসজিদের নির্মাণ ব্যয় জমি অধিগ্রহণের পর নির্ধারণ করা হবে।বগুড়া জেলা প্রশাসক মো.সাইফুল ইসলাম জানান, বগুড়ার এই মডেল মসজিদগুলো গতানুগতিক কোনো মসজিদ নয়। এটি আরব বিশ্বের মসজিদ-কাম-ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের আদলে করা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে থাকছে নারী ও পুরুষের পৃথক অজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, নারীদের জন্য পৃথক ও আধুনিক সুবিধা সংবলিত ওয়াশরুম এবং চেঞ্জিং রুম সুবিধা। গবেষণা ও দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম, পবিত্র অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাস। ইসলামী জ্ঞান প্রচারের সুবিধার্থে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপজেলা ও জেলা কার্যালয় এবং ইমাম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। মুসাফির এবং দূর থেকে আসা মুসল্লিদেরর জন্য পার্কিং সুবিধা। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতকরণের লক্ষে প্রত্যেক মডেল মসজিদে পৃথক সাবস্টেশন ও জেনারেটর সুবিধা। পর্যাপ্ত আধুনিক লাইটিং এবং সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা। মৃত ব্যক্তির গোসল এবং লাশ রাখার ঘর। হজ যাত্রীদের প্রশিক্ষণ সুবিধা রয়েছে। মডেল মসজিদে রয়েছে পবিত্র কোরআন হেফজ ও শিশু শিক্ষাসেবা। বগুড়া জেলা সদর ও অন্যান্য উপজেলা পর্যায়ে ৪০ শতক জায়গায় অপার বিস্ময়ের এ মডেল মসজিদ গুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।
বগুড়া জেলা সদরে দৃষ্টিনন্দন চার তলা মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং উপজেলার জন্য তিন তলা মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
বগুড়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এইচ এম শাহরিয়ার জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ১৩টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৭টি মডল মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে। বাকি ৬টি মডেল মসজিদ নির্মাণাধীন রয়েছে। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত