চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে কিংবা আগামী বছরের জানুয়ারিতে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড় করার কথা ছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের(আইএমএফ)। কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার ছাড়া অর্থ ছাড় দিতে রাজি নয় আইএমএফ।
সংস্থাটি বলছে, নতুন সরকার গঠনের পর তাদের সংস্কার কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষার বিষয়ে আলোচনা করেই অর্থ ছাড় দেওয়া হবে। ষষ্ঠ কিস্তিতে আইএমএফ থেকে ৮০ কোটি ডলারের কিছু বেশি পাওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে ঋণের ষষ্ঠ কিস্তির শর্ত পর্যালোচনায় আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) আইএমএফ এর একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরে আসার কথা রয়েছে। দুই সপ্তাহ তারা সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে। ফিরে গিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এই সফরের ওপর কিস্তির ছাড়ের বিষয়ে ভূমিরা রাখবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২১৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ইতিবাচক গতি রয়েছে, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রিত। চলতি হিসাবেও ঘাটতি নেই।
সম্প্রীতি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হওয়া আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভার ফাঁকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফ এর প্রতিনিধি দল। বৈঠকে অর্থ ছাড় দেওয়ার বিষয়ে এমন বার্থা দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, চলতি ডিসেম্বরেই ঋণের কিস্তি ছাড় হওয়ার কথা থাকলেও, নির্বাচনপূর্ব সময়ে আইএমএফ তা দিতে রাজি নয়। রিজার্ভ পরিস্থিতি ভালো, ডলার স্থিতিশীল। আইএমএফ-এর নীতি সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ, তবে তাদের অর্থও ছাড়া দেশ চলবে।
গর্ভনরের এমন বক্তব্যের পর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আইএমএফ এখন তাদের শর্ত বাস্তবায়নে চাপ তৈরি করছে। তারা নতুন সরকার এলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে পরে অর্থ ছাড় করবে।
এর আগে ২০০১ সালেও নির্বাচনের আগে অর্থ ছাড় করতে নারাজ ছিল এইএমএফ। এমনকি ২০২২ সালে জ্বালানি ও মুদ্রানীতিতে কড়াকড়ি আরোপ করে ঋণের শর্তে তেল ও গ্যাসের দামও বাড়াতে বাধ্য করেছিল সরকার। যার কারণে মুদ্রার অবমূল্যায়ন বাজারে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপে আইএমএফ এর কাছে সহায়তা চায় বিগত সরকার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। যা পরবর্তীতে ৫৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়।ইতোমধ্যে পাঁচ কিস্তিতে ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।
বিডি প্রতিদিন/কামাল