বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সাগরপথে মানব পাচার

দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন

সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ট্রলারডুবিতে ১৫ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৭২ জনকে। প্রায় ৫১ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। সেন্ট মার্টিনের ৭-৮ কিলোমিটার দূরে মঙ্গলবার সকালে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। ট্রলারে বেশ কয়েকজন তরুণীও ছিল। বিয়ে করে মালয়েশিয়ায় ঘরসংসার বাঁধার স্বপ্নে বিভোর ছিল তারা। যুবকদের লক্ষ্য ছিল শরণার্থী শিবিরের ক্ষুদ্র পরিসরে আটকে না থেকে উন্নত জীবনের খোঁজে স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায় যাওয়া। কক্সবাজারে আশ্রিত ১৩৮ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী দালাল ধরে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে ট্রলারডুবির মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিখোঁজ অন্তত ৫১ জনকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ট্রলারডুবিতে নিহতের মধ্যে ১২ জনই রোহিঙ্গা তরুণী, যারা বিয়ে করে সংসার পাতার স্বপ্নে দলবেঁধে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল বলে জানিয়েছে উদ্ধার হওয়া অন্য তরুণীরা। বাকি তিনটি লাশ শিশুর। যে ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে ২৪ জন পুরুষ, ৪৬ জন নারী ও দুটি শিশু। উদ্ধারকৃতদের দুজন বাংলাদেশি দালাল। সোমবার রাতে টেকনাফ উপকূল থেকে দুটি ট্রলার মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সাগরের পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি ট্রলার ডুবে যায়। উদ্ধার হওয়া কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, দালালদের মাধ্যমে তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে বের হয়ে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন। মর্মান্তিক ওই ঘটনায় দুই দালালকে আটক করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের অনেকেই সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করে। সেখান গিয়ে তারা নিজেদের বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেয়। মানব পাচারকারী দালাল চক্রের কারণে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানি বিঘিœত হচ্ছে। মানব পাচার একটি বড় ধরনের অপরাধ। দালাল চক্রের সদস্যরা মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার নাম করে বিপুল অর্থ নিয়ে হতভাগ্যদের সাগরে ফেলে দিয়েছে- এমন নজিরও কম নয়। মালয়েশিয়ায় অভিবাসন পেতে ইচ্ছুকদের দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে। আমরা আশা করব, আটক পাচারকারী দলের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হবে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর