শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সুন্দরবনের পর্যটন

সুন্দরবনের পর্যটন

অন্তত সাড়ে পাঁচ মাস ধরে বন্ধ বিশ্ব ঐতিহ্যের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের যাতায়াত। আসছে শীত, পর্যটনের সেরা মৌসুম। কিন্তু এ মৌসুমেও যাতায়াত শুরু হবে কিনা তা বলতে পারছে না কেউ। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এমনই অনিশ্চয়তায় রয়েছে খুলনা অঞ্চলের পর্যটনশিল্প। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ/ জাহাজ মালিক-শ্রমিক ও পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

খুলনা তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটনশিল্প বলতে বিশ্বখ্যাত নয়নাভিরাম সুন্দরবনকেই বোঝায়। সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটনশিল্পে লক্ষাধিক মানুষের রুটিরুজি জড়িত। সারা বছর দেশি-বিদেশি বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আনাগোনায় মুখর থাকে সুন্দরবন উপকূল। তবে বর্ষার পরই সাধারণত সুন্দরবনের পর্যটন মৌসুম শুরু। সে হিসেবে এখনই সময় প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগের। করোনা-ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে গত ১৯ মার্চ পুরো সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত ও নৌযান সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনজুড়ে এ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার নির্দেশনা ছিল। সুন্দরবনের নয়টি পর্যটন এলাকায় পর্যটন মৌসুমে (নভেম্বর থেকে মার্চে) কোনো কোনো দিন ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ অবস্থান করে। ফলে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় চরম দুর্ভোগে পড়ে বনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে থাকা দর্শনার্থীরা। চরম আর্থিক হুমকির মুখে পড়েন ট্যুর অপারেটর ও সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, পার্বত্য তিন জেলা, কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ দেশের প্রায় সব পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনও খুলে দিলে কোনো সমস্যা নয় বরং সরকারের রাজস্ব বাড়বে। সুন্দরবন-কেন্দ্রিক ৭০টি ট্যুর কোম্পানির অর্ধশত জাহাজের কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় পাঁচ মাস বেকার। চরম আর্থিক সংকটে রয়েছেন তারা। মাত্র তিন থেকে চার মাস সুন্দরবনের পর্যটন মৌসুম, এরপর সারা বছর বসে বসে কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন গুনতে হয়। সেই সময়টাতেই যদি পর্যটন বন্ধ থাকে, তাহলে একদিকে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব বঞ্চিত হবে, অন্যদিকে সুন্দরবন-কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পটি বিধ্বস্ত হয়ে যাবে। সুন্দরবন উপকূলের লোনা অঞ্চলের মানুষ প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল, করোনা সংক্রমণে তারা সেভাবে আক্রান্ত হয়নি। সে হিসেবে বলা যায়, সুন্দরবন অঞ্চল নিরাপদ। ১৯ মার্চ বন্ধ ঘোষণার পর পর্যটকদের যাতায়াত ও নৌযান চলাচল বিষয়ে আর কোনো নির্দেশনা আসেনি মন্ত্রণালয় থেকে।

লকডাউনে দীর্ঘদিন বাড়িতে আটকে থাকার পর প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেতে মন চায় সবারই। নিরিবিলি পরিবেশে সপরিবার প্রাণভরে শ্বাস নিতে চাইলে সুন্দরবন ভ্রমণের বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর