শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রিয় নবীর সুন্নত পালনের মধ্যে রয়েছে মুক্তি

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

প্রিয় নবীর সুন্নত পালনের মধ্যে রয়েছে মুক্তি

সুন্নতে রসুল পালনের মধ্যে রয়েছে আমাদের জন্য হেদায়াত ও মুুক্তি। প্রিয় নবী কোন কাজ কীভাবে করেছেন আমাদেরও সে কাজ সেভাবে করতে হবে। রসুল (সা.) যেভাবে নামাজ পড়েছেন আমাকে সেভাবে নামাজ পড়তে হবে। তিনি যেভাবে খাওয়া-দাওয়া করেছেন আমাকে সেভাবে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। আল কোরআনের সুরা আলে ইমরানের ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! আপনি বলে দিন যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও তাহলে আমি রসুলের অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের জীবনের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন। আল্লাহ অতিশয় দয়ালু মেহেরবান।’ এ আয়াত দ্বারা বোঝা গেল, আল্লাহর ভালোবাসার মানদন্ড হলো রসুলের সুন্নত পালন। যার মধ্যে যত বেশি রসুলের সুন্নত থাকবে সে তত বেশি আল্লাহর ভালোবাসা পাবে। সঙ্গে সঙ্গে এও প্রমাণিত হলো, নবীর সুন্নত পালন করলে দুটি পুরস্কার পাওয়া যাবে। প্রথম পুরস্কার হলো আল্লাহ স্বয়ং তাকে ভালোবাসবেন। দ্বিতীয় পুরস্কার তার জীবনের সব গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেবেন। এ দুটি পুরস্কার এমন যে, এগুলো লাভ করা গেলে আর কোনো পুরস্কারের প্রয়োজন নেই। হাদিসে সুন্নতে রসুলের অনুসরণের প্রতি ব্যাপকভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। হজরত ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) বলেছেন, ‘একবার রসুল (সা.) আমাদের নিয়ে নামাজ পড়লেন। তারপর আমাদের দিকে মনোনিবেশ করলেন এবং এমন হৃদয়স্পর্শী আলোচনা করলেন যে, এতে আমাদের অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগল এবং অন্তর ভয়ে কম্পমান হয়ে গেল। এ অবস্থায় এক লোক বলল, ইয়া রসুলুল্লাহ! এটা যেন কোনো বিদায় দানকারীর উপদেশ। তাই আমাদের আরও কিছু ওসিয়ত করুন। তিনি তখন বললেন, আমি তোমাদের তাকওয়া অবলম্বন ও আমিরের আনুগত্যের ওসিয়ত করছি। এমনকি আমির যদি কোনো হাবশি ক্রীতদাসও হয়। মনে রেখ! আমার পরে যারা বেঁচে থাকবে তারা অনেক মতবিরোধ দেখবে। অতএব, তোমরা আমার এবং আমার পরবর্তী খোলাফায়ে রাশেদিনের (সঠিক পথপ্রাপ্ত চার খলিফার) সুন্নতকে অবলম্বন করে থাকবে, যারা হেদায়াতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তোমরা এ সুন্নত ও আদর্শকে ধরে থাকবে এবং মজবুতভাবে তা পালন করবে। ইসলামে  নতুন উদ্ভাবিত যে কোনো মতাদর্শ থেকে দূরে থাকবে। কেননা, প্রতিটি নতুন মতাদর্শই বিদাত। আর প্রতিটি বিদাতই পথভ্রষ্টতার কারণ।’ মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ। এ হাদিস থেকে বোঝা গেল, সব সময় বিদাত থেকে দূরে থাকতে হবে। ইসলামের নামে সমাজে নতুন কিছু চালিয়ে দেওয়া বা চাপিয়ে দেওয়াই হলো বিদাত। হজরত আনাস (রা.) বলেছেন, ‘রসুল (সা.) আমাকে বলেছেন, হে বৎস! তুমি যদি সকাল-সন্ধ্যা এভাবে থাকতে পারো যে, তোমার অন্তরে কারও প্রতি হিংসা ও অকল্যাণ চিন্তা নেই, তাহলে তাই কর। তারপর তিনি বললেন, এটা হচ্ছে আমার সুন্নত ও নীতি। আর যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে ভালোবাসে, সে আমাকেই ভালোবাসে। আর যে আমাকে ভালোবাসল সে জান্নাতে আমার সঙ্গেই থাকবে।’ তিরমিজি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্নতের ওপর আমল করার তৌফিক দান করুন।

লেখক :  খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর