সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কোন পথে সম্ভব

তুষার কণা খোন্দকার

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কোন পথে সম্ভব

ফিলিস্তিনি জনগণের অস্তিত্বের বিপক্ষে ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকে জোরালো কণ্ঠে সোচ্চার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনি জনগণ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের প্রশ্নে বাংলাদেশের আপসহীন অবস্থান বারবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ব্যক্ত করে আসছেন। ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রশ্নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপসহীন ভূমিকার ঐতিহাসিক পরম্পরা। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশের পাসপোর্টে দেশের নাগরিকদের জন্য দুটি রাষ্ট্র ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকত। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইসরায়েল। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে কালো মানুষের আন্দোলন সফল হওয়ার পর ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সে দেশে বর্ণবৈষম্যবাদের অবসান ঘটে। সংগত কারণেই বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। এর পরে বাংলাদেশের পাসপোর্টে শুধু ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে। ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি আরব জনগোষ্ঠীর ন্যায়সংগত অধিকার অস্বীকৃত হওয়ায় বাংলাদেশ ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ বোধ করেনি। ২০২১ সালের মে-তে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। বাংলাদেশি পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের কোনো ঘোষণা আসেনি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশে কোনো কোনো মহল সাময়িক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। ইসরায়েল ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা তেমন উল্লেখযোগ্য ঘটনা না হলেও এ বিষয়ে টুকটাক কানাঘুষা যে হয়নি তা নয়। বলা যায় পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণের নিষধাজ্ঞা তুলে দেওয়া নিয়ে দেশের ভিতর মৃদু গুঞ্জন চলছে। আমি এ গুঞ্জনকে সাধারণ মানুষের কৌতূহল বলে মনে করি। আসলে দেশের মানুষ পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ থেকে যতটুকু শুনেছে তাতে তাদের কৌতূহল মেটেনি। তারা বিষয়টি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চায়। বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল রাষ্ট্রের সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আমার মনে কৌতূহল জেগেছিল। আমি ভেবেছি, বর্তমান বিশ্বে মুসলিম নাগরিক-প্রধান দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখলে আমরা আমাদের পাসপোর্টের শর্ত পরিবর্তন নিয়ে স্বস্তি বোধ করতে পারব। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েল স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেওয়ার পর পৃথিবীর ১৬৪টি দেশ ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৪ মে, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র দুনিয়ার ওপর ভূমিষ্ঠ হওয়ামাত্র তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন যে দেশ আজকের রাশিয়া তারা তড়িঘড়ি করে ১৭ মে ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে ফেলল। আমেরিকা কোনো সোজা-সাপটা রাষ্ট্র নয়। তারা যখন যা কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাতে গণতন্ত্র এবং মানবতার প্রলেপ দিয়ে সিদ্ধান্তটিকে বেশ চকচকে মোলায়েম করে তুলতে ভালোবাসে। রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে আমেরিকা যথারীতি গণতন্ত্রের ধ্বজা তুলে ধরার ভান করেছিল। আমেরিকা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল। ১৯৪৯ সালের জানুয়ারিতে ইসরায়েলে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পর ইসরায়েলের নির্বাচিত পার্লামেন্ট রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করে। যথারীতি পার্লামেন্টের ভোটে ইসরায়েলে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার পর আমেরিকা

ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে দিল। আমেরিকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কতখানি আপেক্ষিক তার বড় প্রমাণ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার সাজানো নাটক। ধর্মভিত্তিক ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার সময় আমেরিকা ঘুণাক্ষরে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর কথা ভেবে দেখার তাগিদ বোধ করল না। ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম এবং ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে আমেরিকার আশ্রয়-প্রশ্রয় নিয়ে একাধিক মহাভারত লিখেও কেচ্ছা শেষ হওয়ার নয়। এ প্রসঙ্গ আপাতত এক পাশে সরিয়ে রেখে আমি মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েল রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরছি। বিশ্বের মুসলিম-প্রধান দেশগুলোর ভিতর মুরুব্বি তুরস্ক প্রথম ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। ১৭ মে, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ১০ মাস পর ’৪৯ সালের মার্চে মুসলিম-প্রধান দেশ তুরস্ক ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি ভিন্নধর্মী উদাহরণ সৃষ্টি করে। এরপর মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম-প্রধান দেশগুলোর মধ্যে ইরান ইসরায়েলকে স্বীকৃতিদাতা দ্বিতীয় দেশ। তুরস্কের পরপর ’৫০ সালের মার্চে ইরান ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ঠিকই কিন্তু ’৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লব ঘটার পর ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে সব কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ও মরক্কোর সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। এ পর্যন্ত পৃথিবীর মোট ১৬৭টি দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর অনেকটিই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। মিসর, মালদ্বীপ, জর্ডান এসব মুসলিম-প্রধান দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সেন্ট্রাল এশিয়ান মুসলিম-প্রধান দেশগুলো স্বাধীন হয়। দেশগুলো স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছে। অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ সম্পর্কে বলা যায় যেখানে ইহুদি জনবসতি প্রায় নেই বললেই চলে তবু সেসব দেশ বিশ্বরাজনীতির বাস্তবতা মেনে নিয়ে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে দেশটির সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করেছে। এ প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে তুর্কমেনিস্তানের কথা উলেখ করা প্রাসঙ্গিক। তুর্কমেনিস্তানের মূল জনগোষ্ঠী সুন্নি মুসলমান। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার প্রেক্ষাপটে তুর্কমেনিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। দেশটি ১৯৯৩ সালে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছে।

মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কের প্রসঙ্গে তুরস্কের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কের কথা আরেকটু ব্যাখ্যার দাবি রাখে। ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের পরপরই তুরস্ক শুধু যে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছে তা নয় বরং ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকে তুরস্ক দেশটি ইসরায়েলের সমরাস্ত্র কেনাবেচার বড় অংশীদার। তুরস্কের সঙ্গে ইসরায়েলের বাণিজ্য সম্পর্কের একটি মজার দিক উল্লেখ করতে আমি রীতিমতো প্রলুব্ধ। তুরস্ক বহু বছর ধরে ইসরায়েলের কাছ থেকে হরেক পদের মারণাস্ত্র কিনে আসছে। বিনিময়ে তুরস্ক ইসরায়েলকে মিলিটারি বুট জুতা এবং ইসরায়েলি সৈন্যদের ইউনিফর্ম বানিয়ে সরবরাহ করে। অর্থের অঙ্কে বিচার করলে ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য খারাপ নয়। বলতে গেলে প্রায় সামান সমান। অনেক বছর ধরে ইসরায়েল তার বন্ধুরাষ্ট্র তুরস্কের আকাশসীমায় অনায়াসে বিমান চালনার মহড়া চালিয়ে আসছে। ইসরায়েলের কয়েকটি শহরে তুরস্কের জাতীয় নেতা মোস্তফা কামাল পাশার মর্মর মূর্তি আছে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী অনেক দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সঙ্গে রীতিমতো ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। যেসব মুসলিম-প্রধান দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছে সেসব দেশ ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থ রক্ষায় কী ভূমিকা পালন করছে তা এখন ভাবার সময় এসেছে। ফিলিস্তিনিদের সমস্যা সমাধানের জন্য পৃথিবীর অনেক দেশের মতো বাংলাদেশ বিশ্বাস করে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন দুটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব। গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বছরও বাংলাদেশের সুস্পষ্ট অবস্থান বিশ্বসমাজের সামনে তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল দুটি দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল এবং আরব উভয় ভূখন্ডে অর্থাৎ সমস্ত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা চাই ফিলিস্তিনিরা তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে দুনিয়ার বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগ পাক। এ ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে তার আগ্রাসী নীতি থেকে সরে এসে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায় তাহলে তাকে ১৯৬৭ সালের মিসর-ইসরায়েল যুদ্ধের আগের সীমারেখায় ফিরে যেতে হবে। যখন তখন খেয়াল-খুশি মাফিক আরব বসতি উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতি স্থাপনের পুরনো অভ্যাস তাকে ত্যাগ করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার স্থায়ী সমাধান কল্পনা করাও সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েলের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও বাংলাদেশিরা ইসরায়েল ভ্রমণ করতে পারবেন না। অর্থাৎ ইসরায়েলের আগ্রাসী রাজনীতির প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন আগেও ছিল না এবং এখনো নেই। কয়েক বছর ধরে ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখন্ডে যেভাবে বেপরোয়া আক্রমণ চালিয়ে আসছে তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট যে ইসরায়েল বিশ্বসম্প্রদায়ের ন্যায়নীতির কথায় কর্ণপাত করতে আগ্রহী নয়। আমেরিকার মধ্যস্থতায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা আদৌ সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি না। বিগত সাত দশক ধরে আমেরিকা ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানকারীর ভূমিকায় চমৎকার অভিনয় করেছে কিন্তু ফিলিস্তিনিদের এতে কোনো উপকার আজও হয়নি। ২০২১ সালেও গাজা ও পশ্চিম তীরের মাটি ফিলিস্তিনিদের রক্তে ভিজে যাচ্ছে। আমেরিকার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার দেশগুলো এককভাবে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আলোচনা ফলপ্রসূ করতে পারবে না কারণ পশ্চিমা রাজনীতিতে আমেরিকার প্রচ্ছন্ন মোড়লি এখন দুনিয়ার মানুষ জেনে ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যেসব দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে তারা এবং অন্যান্য মুসলিম দেশ সমবেতভাবে অভিন্ন কৌশল নিয়ে এগিয়ে গেলে ফিলিস্তিনি জনগণ হয়তো তাদের সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে পাবে।

লেখক : কথাসাহিত্যিক।

সর্বশেষ খবর