সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দালালদের সামাল দিন

জনশক্তি রপ্তানিতে স্বচ্ছতা কাম্য

দালালনির্ভরতার কারণে জনশক্তি রপ্তানি খাতের সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়ায় লোক সংগ্রহের সিংহভাগই সম্পন্ন হয় দালালদের মাধ্যমে। রিক্রুটিং এজেন্সির নামধাম না জেনেও অনেকে দালালের হাতে তুলে দেয় টাকা। দালালরাই পাসপোর্ট বানিয়ে দেয়, মেডিকেল টেস্টও সম্পন্ন হয় তাদের মাধ্যমে। দালালনির্ভরতার কারণে বিদেশে যেতে বাংলাদেশের কর্মীদের অন্য দেশের কর্মীদের চেয়ে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি খরচ হয়। জনশক্তি রপ্তানিতে দালালরাই শেষ কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিদেশেও বড় ধরনের ফাঁদ পেতে রেখেছে দালাল চক্র। সম্প্রতি ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই গিয়ে কাজের সুযোগ থাকায় জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসায় দালাল নামধারী মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে কয়েক গুণ। লিখিত কোনো অনুমোদন না থাকলেও দুবাই কর্তৃপক্ষ ভিজিট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিচ্ছেন। এর মধ্যে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভিজিট ভিসায় বিমানবন্দর দিয়ে বডি কন্টাক্টেও অনেকে দুবাই যাচ্ছেন। বডি কন্টাক্টে যাওয়াদের তেমন কোনো রেকর্ডই থাকছে না। তাদের না আছে কোনো বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স, না আছে দুবাইয়ের কোনো কোম্পানির অনুমতি। তারা পাচারের শিকার কি না তা-ও অনুভব করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পাশাপাশি সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার নামে দালালরা প্রতারিত করছে বিদেশ গমনেচ্ছুদের। ভুয়া কোম্পানির নামে ভিসা দিয়ে কর্মীদের সৌদি আরব পাঠিয়ে তাদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন দুই দেশের দালালরা। জনশক্তি খাতের এ অনিয়ম অজানা না হলেও বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেই। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে সিংহভাগ কর্মী যায় বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে। দালালরা অভিবাসন প্রক্রিয়ার তৃণমূল পর্যায়ে অবস্থান করায় বিদেশ গমনেচ্ছুরা তাদের ওপর নির্ভর করে। জনশক্তি এজেন্সিগুলোর জেলা পর্যায়ে অফিস না থাকায় এবং বিদেশ গমনেচ্ছুদের সিংহভাগ স্বল্প শিক্ষিত হওয়ায় তাদের ঠকানো দালালদের পক্ষে সহজ হয়ে দাঁড়ায়। জনশক্তি রপ্তানি খাতে স্বচ্ছতা আনতে দালালদের হয় বৈধ করতে হবে, নতুবা এ খাতে তারা যাতে কোনো ভূমিকা রাখতে না পারে তা নিশ্চিত করা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর