শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

অসহ্য যানজট

রাস্তা ফুটপাথ দখল বন্ধ হোক

যানজটের নগরী হিসেবে ঢাকার পরিচিতি দুনিয়াজুড়ে। জরুরি কাজেও বাধ্য না হলে অনেক বিদেশি বাংলাদেশে আসতে চান না যানজট নামের ভয়াল দৈত্যের ভয়ে। রোজার মাসে যানজট সহ্যের সীমা অতিক্রম করে। কর্মজীবী রোজাদারদের ভোগান্তি বাড়ে যানজটে। চলতি বছর ২০ রোজা পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় যানজটের ভয়াবহতা দানবীয় রূপ নিয়েছে। রাজধানীতে যানজটের প্রধান কারণ পরিকল্পনাহীনভাবে সবকিছু করার মানসিকতা। পরিণতিতে একের পর এক ফ্লাইওভার, ইউলুপ নির্মাণেও যানজট কমছে না। রাস্তাতেই নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা। সড়কে যানবাহন স্থির দাঁড়িয়ে থাকায় পুড়ছে জ্বালানি। ‘দ্য ফিউচার প্ল্যানিং অব আরবান ট্রান্সপোর্টেশন ইন ঢাকা’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, যানজটের কারণে ঢাকায় দৈনিক ৫০ লাখ কর্মঘণ্টার অপচয় ঘটছে, যার আর্থিক ক্ষতি বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষণায় বলা হয়, ২০০৪ সালে ঢাকার রাস্তায় প্রতি ঘণ্টায় গাড়ির গতিসীমা ছিল গড়ে ২১ দশমিক ২ কিলোমিটার, ২০১৬ সালে তা ঘণ্টায় ৬ দশমিক ৮ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। আর বর্তমানে তো ঢাকা যানজটের দাপটে অচল হওয়ার উপক্রম। পরিসংখ্যানও প্রহসনে পরিণত হয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণ যানজট বাড়াতে অবদান রাখছে। বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পটি ১০ বছরেও শেষ হয়নি। এ প্রকল্প এখন ঢাকা ও গাজীপুরের যানজটের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা আটকে উন্নয়ন কাজ ও ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে লাগছে ৩-৪ ঘণ্টা। যানজট থেকে ঢাকার দেড় কোটি মানুষকে রেহাই দিতে হলে ট্রাফিক শৃঙ্খলা না মানার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যেখানে সেখানে বাসে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং গাড়ি পার্কিং বন্ধ হওয়া দরকার। আর রাস্তা ও ফুটপাথ দখল করে দোকানপাট বসানোর ব্যবসা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়াও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর