শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি

সঠিক পথে এগোতে হবে

দেশের আমজনতার কাছে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা মূল্যস্ফীতি। নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রত্যক্ষভাবে ভুগছে দেশের ১৪ থেকে ১৫ কোটি মানুষ। সরকারেরও প্রধান মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ সমস্যা। বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগায় চাল। চালের দাম বাড়লেই স্বাভাবিক নিয়মে বেড়ে যায় অন্য সব নিত্যপণ্য। মূল্যস্ফীতিতে সৃষ্টি হয় অপ্রতিরোধ্য গতি। এ বছর আগাম বন্যার কারণে চালের উৎপাদন কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। পরিণতিতে বেড়ে গেছে চালের দাম। ঘাটতি পূরণে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে খাদ্যের দাম লাগামহীন বাড়লেও সরকার এ ব্যাপারে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে কার্পণ্য করছে না। একদিকে ভোজ্য ও জ্বালানি তেলের দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি, অন্যদিকে উচ্চ দামে চাল ও গম কিনতে গিয়ে সরকারকে দিশাহারা অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। তার পরও সার্বিক পরিস্থিতিতে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশলকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির এ প্রধান কারণটি ঠেকাতে চাল আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের কৌশল বিবেচনায় আনা হচ্ছে। সরকারের এ কৌশল অর্থাৎ চাল আমদানি করে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা বাস্তবতার আলোকে যৌক্তিক মনে হলেও স্থায়ী সমাধান ভাবা ভুল হবে। বরং ভবিষ্যতের কথা মনে করে চালের উৎপাদন ব্যাপক হারে বাড়াতে হবে। চালের পাশাপাশি গম ও ভুট্টা চাষে উৎসাহ দিতে হবে। উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষিকে পুরোপুরিভাবে যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষিতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে যাতে কৃষক খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহী হয়। হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করার চেয়ে কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ অনেক বেশি লাভজনক। আমাদের বিশ্বাস, সরকার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিকে তাদের অগ্রাধিকার কর্মসূচি হিসেবে নেবে। উৎপাদনের সুফল যাতে কৃষক ভোগ করে এমন কৌশলও উদ্ভাবন করা জরুরি। দারিদ্র্য বিমোচনে সস্তা দরে খাদ্য বিক্রি নয়, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় প্রতি ইঞ্চি জমির সদ্ব্যবহারের উপদেশ দিয়ে বসে থাকলে চলবে না, ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও জরুরি। তা হলেই খাদ্য উৎপাদন বাড়বে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর