শিরোনাম
রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

সমস্যাক্রান্ত ঢাকা

সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় প্রয়োজন

গত অর্ধশতাব্দীতে ঢাকার আয়তন বেড়েছে বিপুলভাবে। বেড়েছে জৌলুশ। মুঘল আমলে সুবে বাংলার রাজধানী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল ঢাকা। দিল্লির মুঘল শাসকদের পতনের যুগে ঢাকা থেকে রাজধানী সরিয়ে নেওয়া হয় মুর্শিদাবাদে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের শেষ দিকে পূর্ব বাংলা ও আসামের রাজধানীর মর্যাদা লাভ করে ঢাকা। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর পূর্ব বাংলার রাজধানী হিসেবে ঢাকার নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ। পাকিস্তানি শাসনের জিঞ্জির ছিন্ন করে ১৯৭১ সালে এ নগরীর উত্থান ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী হিসেবে। একসময় যে নগরীর জনসংখ্যা ছিল কয়েক হাজার তা আজ দেড় কোটি ছুঁইছুঁই করছে। স্বাধীন দেশের রাজধানী হিসেবে গত অর্ধশতাব্দীতে ঢাকা দৃশ্যত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে গেলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় রাজধানীবাসীর দুর্ভোগও সমভাবে বেড়ে চলেছে। উন্নয়ন কাজে সমন্বয়হীনতা ও অব্যবস্থাপনায় ঢাকা বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হচ্ছে। গণপরিবহন সংকট, ভয়াবহ যানজট, মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, যত্রতত্র আবর্জনা, বিশুদ্ধ পানির সংকট, মশার উৎপাত, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বছরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নগরজীবন। নাগরিক সুবিধা দিতে অপারগ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতায় বছরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়িতে অনেকেই এখন ঢাকা ছাড়ার সুযোগ খুঁজছেন। আবার সংকটের মধ্যেই প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ কাজের খোঁজে ভিড় করছে রাজধানীতে। লন্ডনভিত্তিক ম্যাগাজিন দি ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের চলতি বছর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের ১৭২ শহরের মধ্যে বাসযোগ্যতায় ঢাকার স্থান ১৬৬তম। বাসযোগ্যতা বোঝার জন্য স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামো- এ পাঁচ মানদন্ডে বিচার করে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। পাঁচ সূচকের মধ্যে ঢাকা সবচেয়ে কম ২৬.৮ স্কোর পেয়েছে অবকাঠামোয়, এ সূচকে ঢাকার অবস্থা সারা বিশ্বে নিকৃষ্টতম। এ অধঃপতিত অবস্থা থেকে দেশের মর্যাদার প্রতীক রাজধানীকে উদ্ধারে সেবাদানকারী প্রতিটি সংস্থাকে দুই সিটির অধীনে আনতে হবে। সেটিই হবে সমাধানের প্রকৃষ্ট পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর