মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

সময়ের চাহিদা পূরণে নজর দিতে হবে

দেশে উচ্চশিক্ষা বিস্তারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছিল তিন দশক আগে। উদ্দেশ্য ছিল মানসম্মত উচ্চশিক্ষার দ্বার অবারিত করা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, গত তিন দশকে ব্যাঙের ছাতার মতো একের পর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠলেও সিংহভাগ উচ্চশিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ন্যূনতম মান রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ১৯৯২ সালের পর ৩০ বছরের ব্যবধানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন ১০৯। স্পুটনিক গতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তার ঘটলেও গুণগত মানে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো উন্নতি ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত ১০ বছরেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি। বরং অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে! গবেষণায় অনীহা, সনদ-বাণিজ্য, অনুমোদনহীন শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনা, ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে দ্বন্দ্বসহ অসংখ্য সমস্যায় জর্জরিত কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বছরের পর বছর আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেওয়া তাদের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১২ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ৬০টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ছিল ৩ লাখ ১৪ হাজার ৬৪০ জন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ১০৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ছাত্রছাত্রী ছিল ৩ লাখ ১০ হাজার ১০৭ জন। সে হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৮টি বাড়লেও শিক্ষার্থী না বেড়ে বরং কমেছে। উচ্চশিক্ষা স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। দুনিয়াজুড়েই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে এগিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তার ধারেকাছে যেতে ব্যর্থ হয়েছে। এ দৈন্য কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে তৎপর হতে হবে। নিয়মভঙ্গকে যারা নিয়ম বানানোর কসরত করছে তাদের রুখে দিতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের  পাঠ্যসূচিতে সময়ের চাহিদা পূরণের দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর