সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজপথে সভা সমাবেশ

মান্ধাতা আমলের ঐতিহ্য থেকে সরে আসুন

রূপকথার ভূতেরা নাকি সামনে নয় পেছন পানে হাঁটে। এদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে পেছনে হাঁটা ভূত জাতীয় কিম্ভূতকিমাকায় কিছু বলার সুযোগ নেই। কারণ এ জাতির যা কিছু মহান অর্জন সবই এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর হাত দিয়ে। এ দেশের মানুষের মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছিল অসভ্য পাকিস্তানি শাসকরা। সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা এ দেশের ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করেছিলেন তারা ছিলেন রাজনীতিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের নেতৃত্ব দিয়েছে রাজনৈতিক দলের সরকার। এ সাফল্যের বিপরীতে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বেশির ভাগ যে চিন্তা-চেতনায় মান্ধাতা আমলের ঐতিহ্য রক্ষা করে চলছেন তাও একটি সত্যি। বাংলাদেশে ব্যস্ত সড়ক দখল করে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ, মিছিল নিত্য চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাম ও ইসলামী দলসহ প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচির জন্য বেছে নেয় রাজপথ। এতে তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়ে অসুস্থ রোগী, নারী, শিশুসহ সব বয়সী মানুষ। পুরো শহর অচল না করে নির্দিষ্ট জায়গায় রাজনৈতিক কর্মসূচি করার নিয়ম চালু হলে এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে সাধারণ মানুষ। রাজধানীতে সড়ক বন্ধ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলে পুরো শহর অচল হয়ে যায়। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনেও রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে দেখা দেয় তীব্র যানজট। ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রে যাওয়া, কেনাকাটাসহ বিভিন্ন পারিবারিক কাজে ব্যস্ত সময় কাটায় মানুষ। শিশুরা মাঠে, ফাঁকা রাস্তায় খেলাধুলায় মেতে ওঠে। রাস্তা ফাঁকা থাকায় পণ্য পরিবহন সহজ হয় ব্যবসায়ীদের জন্য।  কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে ওঠে। বর্তমান যুগকে বলা হয় ডিজিটাল যুগ। এ যুগে মাঠে-ময়দানে সভা-সমাবেশ না করেও নিজেদের রাজনৈতিক তত্ত্ব জনগণের কাছে পৌঁছানোর বিকল্প সুযোগ নিতে পারে রাজনৈতিক দলগুলো। জনগণের চলাচলের অধিকার বিঘ্নিত না করে কীভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা যায় তা নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর