সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং র‌্যাগিং

ছাত্রত্ব বাতিলসহ কঠোর সাজা প্রয়োজন

দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বুলিং র‌্যাগিং প্রতিরোধে নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যথেচ্ছতার মচ্ছব যখন সহনশীলতার সীমা অতিক্রম করতে চলেছে তখন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙা শুভ লক্ষণই বটে। বুলিং র‌্যাগিংয়ের সীমাহীন আধিপত্য চলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। যেগুলো পরিচালিত হয় দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায়। এসব প্রতিষ্ঠানে যারা পড়েন তারা দেশবাসীর টাকায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। এদেরই একাংশ শিক্ষা গ্রহণের বদলে শিক্ষাঙ্গন সংলগ্ন এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকেন। ছাত্ররাজনীতির নামে শক্তি প্রদর্শনের চর্চা করেন। ছাত্র ও ছাত্রীনেত্রী নামধারীরা নবাগত শিক্ষার্থীদের ভাবেন ক্রীতদাস হিসেবে। তাদের ওপর নিজেদের নারকীয় প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশে গেস্ট রুমে ডেকে নিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালায়। মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে অহরহ। এসব অপকর্মে এতকাল কর্তাব্যক্তিরা কুম্ভকর্ণের ঘুমে নিমগ্ন থাকলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নবাগত ছাত্রীর ওপর ছাত্রীনেত্রী নামধারীদের নির্যাতনের পর ঘুম থেকে জাগার কসরত চলছে। দেরিতে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং-র‌্যাগিং প্রতিরোধসংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩ বাস্তবায়নের মাধ্যমে অমানবিক আচরণ বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ নীতিমালার খসড়া অধিকতর যাচাই-বাছাই শেষে শিগগিরই চূড়ান্ত হবে।  সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি এ নীতিমালার আওতায় থাকবে। ছাত্রছাত্রীদের ব্যঙ্গ করে নাম ধরে ডাকা, বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি, উত্ত্যক্ত করা, শিস দেওয়া, এমনকি মানসিক চাপ প্রয়োগ করাও বুলিং-র‌্যাগিংয়ের অন্তর্ভুক্ত হবে। গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে নির্যাতন, ছাত্রছাত্রীদের জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ অশালীন মন্তব্য করলেও এ নীতিমালা কার্যকর হবে। আমরা আশা করব এ উদ্যোগ আইওয়াশ বলে বিবেচিত হবে না। সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও বিধান রাখা হবে এমনটিও প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর