শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ

কান্ডজ্ঞানহীনতার ইতি ঘটুক

ইউক্রেন-রুশ ভালুকের থাবা কোনো দেশবিশেষ নয়, বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ অন্যায় যুদ্ধ ইতোমধ্যে দুই বছরে পা দিয়েছে। যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষের জয়-পরাজয় নিশ্চিত না হলেও প্রতিবেশী দুই দেশের বিপর্যয়ই শুধু ডেকে এনেছে। এ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তৃতীয় মহাযুদ্ধের আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। মানব জাতির সমূহ সর্বনাশও ডেকে আনতে পারে যুদ্ধের কান্ডজ্ঞানহীন সম্প্রসারণ। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তাপে ল-ভ- হয়ে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এক বছরে বিশ্ববাজারে প্রতি টন কয়লার দাম বেড়েছে ১৫০ শতাংশ। প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। এলএনজির দাম বেড়েছে ৭১ শতাংশ। প্রতি টন পাম অয়েলের দাম ১৩ শতাংশ, সয়াবিন তেলের দাম ২০ শতাংশ, ভুট্টার দাম ২২ শতাংশ আর গমের দাম বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। চিনির দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। জার্মান ইকোনমিক ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। ২০২৩ সালে আরও ১ লাখ কোটি ডলার ক্ষতির আশঙ্কা করছে সংস্থাটি। চলমান এই যুদ্ধ কবে বন্ধ হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা যত বাড়ছে ততই বাড়ছে বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। এর প্রভাবে চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ধারা কমে ২ দশমিক ৯ শতাংশ দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিবাদে একজোট হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। ইতোমধ্যে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তি স্থগিত করেছে। বাধ্য হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করারও হুমকি দিয়েছে তারা। দুই পক্ষের অনড় মনোভাব বিশ্ববাসীর জন্যই বিপদ ডেকে আনছে।  বাংলাদেশ হাজার হাজার মাইল দূরের দেশ হলেও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার প্রত্যক্ষ শিকার। ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সংখ্যা ১৫০-এর বেশি। মানব জাতির স্বার্থে উভয় দেশ সুবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে যুদ্ধের ইতি ঘটাবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর