লাইলাতুননিসফি মিন শাবান বা শাবান মাসের মধ্যরজনি আজ; যা শবেবরাত বা লাইলাতুল বারাত হিসেবেও পরিচিত। আরবিতে লাইলাতুল শব্দের অর্থ রাত আর বারাত অর্থ মুক্তি। হিজরি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে পুণ্যময় লাইলাতুল বারাত হিসেবে উদযাপন করা হয়। লাইলাতুল বারাতকে মাহে রমজানের মুয়াজ্জিন হিসেবে অভিহিত করা হয়। মহান স্রষ্টা পরম করুণাময়ের কাছে মহিমান্বিত এ রাতে বান্দা পাপ থেকে মুক্তির প্রার্থনা করে। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক শান্তির জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিনের করুণা চায়। এ মহিমান্বিত রাতে আল্লাহ বান্দার প্রার্থনা শুনতে উন্মুখ থাকেন। তিনি নিজেই চান বান্দা তাঁর কাছে এ রাতে করুণা প্রার্থনা করুক। সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথে চলার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হোক। অসত্য, অসুন্দর ও অকল্যাণ থেকে দূরে থাকার জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করুক। শবেবরাতে কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়, জিকির-আজকারের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। আমাদের দেশে এ রাতে আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীদের মধ্যে হালুয়া-রুটি, ফিরনি-পায়েশ বিতরণের রেওয়াজ রয়েছে। এ রাত কেন্দ্র করে অনেকে আলোকসজ্জা, পটকা ফোটানোসহ অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকে। এগুলো শুধু নিন্দনীয়ই নয়, ধর্মীয় দৃষ্টিতেও গুনাহর কাজ। বরকতময় এ রাতের মর্যাদা রক্ষায় মুমিনদের সতর্ক থাকতে হবে। পটকা বা অন্যান্য বাজি ফুটিয়ে যাতে শবেবরাতের পবিত্রতা ক্ষুণœœ করা না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এ রাতের বরকতে আমরা যাতে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারি তা-ই হওয়া উচিত সব বিশ্বাসী মানুষের লক্ষ্য। এ বছর শবেবরাত এমন এক সময় হাজির হয়েছে যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। এ যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে- এমন আশঙ্কাও জোরদার হয়ে উঠছে। এ পবিত্র রাতে আমরা দেশ, জাতি ও বিশ্বশান্তির জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব। দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য তাঁর সাহায্য চাইব। আল্লাহ আমাদের প্রতি তাঁর অশেষ রহমত বর্ষণ করুন।