মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

স্বাধীনতা ও মুক্তিপথ প্রদর্শনের দিন

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসমুদ্র সামনে রেখে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হয়। বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ওই মহাসমাবেশে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছিলেন, তিনি যদি কোনো নির্দেশ দেওয়ার সুযোগ না-ও পান তার পরও বাঙালি যেন আঘাতের বিরুদ্ধে প্রতিঘাত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। বলেছিলেন ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে। ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের দুটি ছাড়া সব কটি আসনে জয়ী হয়। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বাঙালির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিনিধিত্বকারী দল আওয়ামী লীগ। বাঙালির ওপর তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানিদের শাসন ও শোষণ অবসানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ঠিক এ অবস্থায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেও ১৯৭১ সালের ১ মার্চ তা স্থগিত করা হয়। আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শুরু হয় স্বাধীনতার প্রস্তুতি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঘোষণায় দেওয়া হয় স্বাধীনতা ও সংগ্রামের দিকনির্দেশনা। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে ভাষণ দেন তা দুনিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সুবিন্যস্ত ভাষণ হিসেবে বিবেচিত। জাতিসংঘ একে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি যে সত্যিকার অর্থেই একজন কালজয়ী রাজনৈতিক নেতা ছিলেন তার প্রমাণ মেলে ৭ মার্চের ভাষণের বাক্যবিন্যাসে। ৭ মার্চের পথ ধরেই বাংলাদেশের স্বাধিকার সংগ্রাম তুঙ্গে ওঠে এবং ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী রাতের আঁধারে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আমরা মহান ৭ মার্চ উপলক্ষে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। একটি সুখী, সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়াই হোক এই মহান দিনের অঙ্গীকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর