রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদের হুমকি

ধর্মান্ধতা সৃষ্টির প্রক্রিয়া রুখতে হবে

জঙ্গিবাদে বিদেশি অর্থায়ন বাড়ছে। জঙ্গি তৎপরতার অর্থ আনা হচ্ছে নওমুসলিমদের আর্থিক সহায়তা, মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ ও ত্রাণ তৎপরতার নামে। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে পাহাড়ে সক্রিয় নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কর্মকান্ডও চলছে বিদেশ থেকে আসা অর্থে। এরই মধ্যে গোয়েন্দারা টের পেয়েছেন ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, কানাডা, মালয়েশিয়া ও সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশ থেকে জঙ্গিদের কাছে নিয়মিত আসছে মোটা অঙ্কের অর্থ। অর্থের জোগানদাতাদের মধ্যে বেশির ভাগ বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন সরকারবিরোধী একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী এবং কিছু বিদেশি উগ্রবাদী গ্রুপ। শীর্ষ জঙ্গি নেতারা গ্রেফতার না হওয়ায় ঠেকানো যাচ্ছে না জঙ্গিবাদের প্রসার এমন অভিমত গোয়েন্দাদের। জঙ্গিদের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। এ কারণে শিগগিরই পাহাড়ে সমন্বিত অভিযান চালানোর কথা ভাবছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গিদের অবস্থান ভারতের মিজোরাম সীমান্তে। গহিন পাহাড়ের একদিকে মিয়ানমার অন্যদিকে ভারত। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোর কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ মিলিয়ে পাহাড়ে সমন্বিত অভিযান চালানো হবে। এ সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী ও যৌক্তিক। আমাদের মতে, জঙ্গিবাদের থাবা থামাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় করতে হবে। পাশাপাশি জঙ্গি সৃষ্টির মাধ্যমগুলোর দিকে তীক্ষè নজর রাখতে হবে। জঙ্গিবাদ ও ইসলাম যে এক নয় এবং এ দুটির অবস্থান যে সাংঘর্ষিক সে ব্যাপারে ধর্মপ্রাণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে জুমার খুতবায় তা আলোচনার জন্য মসজিদের ইমাম ও খতিবদের উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাতে জঙ্গিবাদের হাতিয়ারে পরিণত না হয়, সেদিকে রাখতে হবে তীক্ষè নজর। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগীর ভূমিকা পালনকারী ধর্মভিত্তিক দলগুলোর বিষয়ে বাড়াতে হবে নজরদারি। ওয়াজে অন্য ধর্ম সম্পর্কে যারা বিদ্বেষ ছড়ায় তাদের তৎপরতা বন্ধে নিতে হবে উদ্যোগ।  ধর্মান্ধতা জঙ্গিবাদের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। ধার্মিক হওয়া এবং ধর্মান্ধতা যে এক নয়, সেটি স্পষ্ট করতে সামাজিক সংগঠনগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর