সোমবার, ২০ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজধানীর খাল

জলাধার রক্ষার কার্যকর উদ্যোগ নিন

রাজধানী থেকে একের পর এক খাল ও প্রাকৃতিক জলাধার উধাও হয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে প্রভাবশালীদের কারসাজি। ঢাকার খালগুলো এখন স্থানীয় প্রভাবশালীদের কব্জায়। তারা খালগুলো ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করে সেখানে বিভিন্ন ব্যবসা কেন্দ্র বসিয়েছেন। ঢাকার খালগুলোর হিসাব নেই কোনো সংস্থার কাছেই। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে ঢাকা ওয়াসা থেকে ২৬টি খাল হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু সেসব খাল উদ্ধার ও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এখন খাল উদ্ধারের জন্য সীমানা নির্ধারণ করে পিলার স্থাপন করছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, সিএস জরিপ অনুযায়ী সীমানা পিলার স্থাপন করায় অনেকের ব্যক্তিগত জায়গায় খুঁটি পড়ছে। এতে সীমানা নির্ধারণে জটিলতায় পড়েছে সংস্থাটি। বলা হচ্ছে, সিএস জরিপ সরকার করেছে আর মহানগর জরিপও সরকার করেছে, তাহলে মহানগর জরিপ কেন সিটি করপোরেশন গ্রহণ করবে না? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিএস দাগে খাল ছিল। মহানগর জরিপে ব্যক্তিগত জমি হয়ে যায় কীভাবে? এগুলো যে ভুয়া কাগজপত্র সহজে অনুমেয়। রাজধানীর খালগুলো এক সময় ছিল সুপ্রশস্ত। বেশির ভাগ খাল উধাও হয়ে গেছে। যেগুলো টিকে আছে সেগুলো ভরাট-দখলে সংকুচিত হয়ে নর্দমার আকৃতি পেয়েছে। ঢাকা ওয়াসার হিসাবেই নগরীতে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৫৪টি খালের অস্তিত্ব ছিল। এসব খালের সংযোগ ছিল রাজধানী লাগোয়া প্রধান চারটি নদ-নদীর সঙ্গে। রাজধানীর এসব খাল ও অন্যান্য জলাশয় এখন বিস্মৃত অতীত মাত্র। খাল-বিল-জলাশয় যথেচ্ছভাবে দখলের পরিণতিতে বর্ষা হলেই রাজধানীতে জলাবদ্ধতার অভিশাপ নেমে আসে। প্রাকৃতিক জলাশয়ের যে সামান্য অংশ টিকে আছে তা দখল ও দূষণে স্বাভাবিক অবস্থা হারিয়েছে বহু আগেই। এগুলো কার্যত, মশক উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। গত কয়েক বছরে বর্ষা মৌসুমে রাজধানীতে  জলাবদ্ধতার অস্বস্তিকর থাবা নাগরিকদের বুঝিয়ে দিয়েছে খালসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ের বিলুপ্তি তাদের জন্য কী অভিশাপ সৃষ্টি করছে। জলাবদ্ধতার অবসান শুধু নয়, রাজধানীতে শ্বাস নেওয়ার মতো পরিবেশ বজায় রাখতে দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধার ও তা পুনঃখননের উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর