বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

পর্যটন স্পট সুন্দরবন

পরিবেশ যেন বিপন্ন না হয়

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে পর্যটকবাহী বিলাসবহুল ক্রুজের আনাগোনা দিন দিন বাড়ছে। দেশের পর্যটনের জন্য এটি সুখবর হলেও পর্যটকদের অসচেতনতা সুন্দরবনের পরিবেশ নষ্ট করছে। গভীর বনে এসব ক্রুজ থেকে খাবার ও পানির বোতলসহ বিভিন্ন ধরনের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নদীতে। পর্যটকরা বিভিন্ন অপচনশীল দ্রব্যসামগ্রী ফেলায় নদী ও বন আবর্জনায় ভরে উঠছে। যথেচ্ছতা চলতে থাকলে বনের জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ ক্ষতির শিকার হবে। পর্যটকরা চাইলেও তখন আর সহজে বনের পশুপাখি দেখার সুযোগ পাবেন না। সুন্দরবনে বর্তমানে ৫০টির বেশি যাত্রীবাহী ক্রুজ চলাচল করছে। সাধারণত একটি ক্রুজে ১০ থেকে ৭৫ জন যাত্রী পরিবহন করা যায়। পরিবেশবিদদের অভিমত, সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় পর্যটক বা ক্রুজ মালিকদের সচেতন হতে হবে। বুঝতে হবে যে সুন্দরবন শুধু একটি ট্যুরিস্ট স্পট নয়, এটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। পর্যটকদের অযৌক্তিক চাহিদা ক্রুজ মালিকদের পূরণ করতে হবে এমনটি ভাবা ঠিক হবে না। সুন্দরবনে কোনো ডিজে পার্টি করার ক্ষেত্রে বাদ সাধতে হবে। গানবাজনা করে বাদাবনে দূষণ করা যাবে না। ক্রুজে পাঠানো গাইডদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এতে গাইডরা সুন্দরবনকে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতে পারবে। সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় জাহাজ মালিক ও গাইডদের নিয়ম মানার জন্য কঠোর হতে হবে। সুন্দরবন বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীক। এ বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার আমাদের গর্বের ধন। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় সুন্দরবন সংলগ্ন জনপদগুলোতে আঘাত ঠেকিয়ে দেয়। এ কারণে সুন্দরবন এবং এ বাদাবনসংলগ্ন নদ-নদীগুলো যাতে প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সুন্দরবন দেশের পর্যটন আয়ের অন্যতম মাধ্যমে হোক এটি সবার কাম্য। কিন্তু কোনো অবস্থায় বিশ্বের এ বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনের গলা টিপে ধরার মতো কান্ডজ্ঞানহীনতায় ভুগলে চলবে না। দুঃখজনক হলেও সত্যি বিদেশি পর্যটকদের দ্বারা সুন্দরবনের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ প্রায় শূন্য। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের পর্যটকদের অসচেতনতা এবং কান্ডজ্ঞানহীনতাই বেশি দায়ী। সুন্দরবনের অস্তিত্বের স্বার্থে যে ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর