বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজধানীর গ্যাস লাইন

নিরাপদ করার উদ্যোগ নিতে হবে

রাজধানী ও ধারেকাছের এলাকাগুলোতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির পুরনো গ্যাসলাইন এবং অবৈধ সংযোগগুলো নাগরিকদের জন্য মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠেছে। প্রায়ই ঘটছে গ্যাসলাইনে দুর্ঘটনা। ঘটছে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি। তিতাসের গ্যাসপাইপের বেশির ভাগই যেমন পুরনো, তেমন নিম্নমানের। ফলে গত পাঁচ বছরে তাদের আওতাধীন এলাকায় গ্যাস পাইপজনিত ১৪টি দুর্ঘটনায় ৫৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহতের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। রাজধানীতে তিতাসের ৭ হাজার কিলোমিটার পাইপলাইন আছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই অতি ঝুঁকিপূর্ণ। পাইপলাইনগুলো ২০ বছর থেকে শুরু করে ৫০ বছরের বেশি পুরনো। গ্যাস লাইনের অর্ধেকের মেয়াদ পেরিয়েছে বহু আগেই। তিতাসের তথ্য মতে, ২০২০ সালে মোট অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে ২৮১টি এবং ২০২১ সালে ৩১১টি। এ ছাড়া এই দুই বছরে গ্যাস লিকেজের ঘটনা ঘটেছে ৭,০৩৫টি এবং ৪,৮৯১টি। ২০২১-২২ অর্থবছরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং কেরানীগঞ্জ এলাকায় মোট ১৬৮২.৪ কিলোমিটার পাইপলাইন সার্ভে করে প্রাথমিকভাবে ৯,৯২৬টি মিথেন গ্যাসের উৎস শনাক্ত হয়। যার মধ্যে ১,৭১২টি গ্যাস উৎস লোকালাইজ করা হয় এবং চূড়ান্তভাবে ৪৫৯টি লিকেজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যা ৯৮৫টি ক্ল্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে মেরামত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানী ঢাকায় এখন যে গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক আছে তা ‘টিকিং টাইম বোম’-এর মতো। যে কোনো মুহূর্তে এই বোমা বিস্ফোরিত হয়ে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। তিতাসের গ্যাস লাইন যে সংখ্যক গ্রাহকের জন্য বসানো হয়েছিল তার চেয়ে দশগুণ গ্রাহককে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।  ফলে গ্যাস পাইপগুলোর ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। পাইপলাইনগুলো যেহেতু দুর্বল এবং অনেক ক্ষেত্রে মানহীন সেহেতু এগুলোর প্রেসার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে রাজধানীর গ্যাস ব্যবস্থাপনা আরও নিরাপদ করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণেও নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর