শিরোনাম
রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

চরাঞ্চলের দুঃখ ঘুচছে

মানবিক উন্নয়নের ফলশ্রুতি

চরের মানুষজন ছিল এক সময় সত্যিকার অর্থেই দুঃখী মানুষ। সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অংশ। নদীভাঙন আর বন্যার কবলে পড়া ছিল তাদের জন্য অলঙ্ঘনীয় নিয়তি। চরাঞ্চলে ছিল না রাস্তাঘাট। ছিল না বিদ্যুৎ কিংবা আধুনিক কোনো সুযোগ-সুবিধা। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ছুটতে হতো শহরে। আইনশৃঙ্খলার বালাই ছিল না চরাঞ্চলে। ফলে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিরা সহজেই আখড়া গাড়ত চরাঞ্চলে। এক যুগের মধ্যে দেশের সব চরাঞ্চলেই এখন পরিবর্তনের হাওয়া। বদলে গেছে তাদের দুঃখ-দুর্দশা বঞ্চনার দিন। নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে দুর্গম চরাঞ্চলে। গড়ে উঠছে নতুন নতুন স্কুল-কলেজ। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমছে। ঘরে বসেই মিলছে মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা। চরের মানুষের হাতে হাতে এখন অ্যান্ড্রয়েড ফোন। দুর্গম চরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন তরুণ-তরুণীরা। উন্নত কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহারে তপ্ত বালুচরে এখন সারা বছরই নানা ফসল ফলছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে সেই ফসল যাচ্ছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, সুইডেনসহ নানা দেশে। কাজের খোঁজে শহরে আসা অনেকেই ফিরতে শুরু করেছেন নিজের শেকড়ে। ক্রমেই চাঙা হচ্ছে চরের কৃষি অর্থনীতি। শুধু প্রতি বছর বন্যা আর নদীভাঙনই এখন চরের মানুষের সামনে মূর্তিমান আতঙ্ক। ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রায় ৭০টির মতো সেবা পাচ্ছে চরের মানুষ। অনলাইনে জন্ম-মৃত্যু সনদ, ভূমি পরিষেবা, পাসপোর্ট-ভিসার আবেদন, হজ নিবন্ধন, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন, চাকরির আবেদন, মোবাইল ব্যাংকিং সবকিছু তাদের নাগালে। দেশের কোনো অংশের মানুষ পিছিয়ে থাকলে সেটি সার্বিক অগ্রগতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। যে কারণে চরাঞ্চলের উন্নয়নে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের এক বড় অংশ নদীভাঙনের শিকার। বাড়িতে আগুন লাগলে সবকিছু পুড়ে গেলেও জমি থাকে। সেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলে। কিন্তু নদীভাঙন মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এমন লাখ লাখ মানুষের জীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া দেশের মানবিক উন্নয়নেরই প্রতিবিম্ব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর