গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কষ্টকর লোডশেডিংয়ের মুখে পড়েছে দেশ। গত দুই সপ্তাহজুড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে এমন উৎপাদন হলে তার এক বড় অংশই অব্যবহৃত থেকে যেত। কিন্তু চৈত্রের শেষ দশক থেকে বৈশাখে গত ৪-৫ দিনে দেশে যে অসহ্য গরম পড়ছে তা শত বছরেও ঘটেছে কি না আমাদের জানা নেই। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন শনৈ শনৈ বাড়ালেও কাজ হচ্ছে না। তীব্র গরমে দেশজুড়ে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি। ১৩ এপ্রিল দেশে রেকর্ড পরিমাণ ১৫ হাজার ৩০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। গরমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ও ফ্যানের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুতের ব্যবহার এতটাই বেড়েছে যে সংকট কাটছে না। একই সঙ্গে রমজান ও সেচ মৌসুম থাকায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে বেশি। ঢাকার কিছু এলাকায় স্বল্প সময়ের জন্য লোডশেডিং হলেও বিভাগীয় শহর ও গ্রামে সাত থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে ১৬ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের চেষ্টা করছে। ১৩ এপ্রিল রাত ৯টায় দেশে রেকর্ড ১৫ হাজার ৩০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও সে সময় ৩০৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল। এদিন সর্বোচ্চ লোডশেডিং ছিল ৭৭৬ মেগাওয়াট। আর পরদিন ১৪ এপ্রিল লোডশেডিং ছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৮০ মেগাওয়াট। দু-তিন দিন ধরে দেশে মোট বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াটে ওঠানামা করছে। বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের কিছুটা বেশি। তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় যারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে অপেক্ষাকৃত সংযমী তারাও অসংযমী হতে বাধ্য হচ্ছেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ব্যবহার ছিল সর্বোচ্চ। দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে বর্তমান সরকার। মানুষ বিদ্যুতের সঙ্গে সহাবস্থানে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে লোডশেডিং মেনে নেওয়া অনেকের পক্ষেই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্টরা সচেষ্ট হবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।