মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণ

শুভবুদ্ধি প্রশংসার দাবিদার

সিরাজগঞ্জে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ৩ শতাধিক চরমপন্থি নেতা-কর্মী অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছেন। আত্মসমর্পণকারীরা সর্বহারা ও পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) লাল পতাকা অংশের সদস্য। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এলিট ফোর্স র‌্যাবের কাছে বিপুলসংখ্যক চরমপন্থির আত্মসমর্পণকে ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর ফলে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন বিভিন্ন জনপদে চরমপন্থি গোপন রাজনৈতিক দলের নামে হত্যা, ডাকাতি, মুক্তিপণ ও চাঁদা আদায়ের দুবর্ৃৃত্তপনার ইতি ঘটানো সম্ভব হবে। স্মর্তব্য, আশির দশক থেকে সিরাজগঞ্জসহ দেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমের কয়েকটি জেলায় যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ থাকায় সর্বহারা ও চরমপন্থিরা ঘাঁটি তৈরি করে। পরে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ‘সন্ত্রাসের জীবন ছাড়ি, আলোকিত জীবন গড়ি’ স্লোগানে সর্বহারা-চরমপন্থিরা আলোর পথে ফিরে আসে। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকার চরমপন্থি নেতা ও সদস্যদের অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরাতে নতুন পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী র‌্যাবকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘র‌্যাব নানাবিধ ভালো কাজ করে যাচ্ছে। তারা জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। এজন্যই চরমপন্থিরা আত্মসমর্পণের জন্য র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। র‌্যাব আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা, মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলের পাশাপাশি নানা মানবিক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতার আগেই মাওবাদী ভ্রান্ত তত্ত্বে উদ্বুদ্ধ হয়ে সর্বহারা পার্টি, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল)সহ বিভিন্ন চরমপন্থি গোপন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর সৃষ্টি হয় জাসদের গণবাহিনী। রাজনৈতিক সাইনবোর্ডের আড়ালে এগুলো ছিল পেশাদার দুর্বৃত্তদের সংগঠন। রাজনীতির সঙ্গে হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ও চাঁদাবাজির দূরতম সম্পর্ক না থাকলে তারা সেটাই করত। আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা যে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন, তা প্রশংসার দাবিদার। আমরা আশা করব, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর