শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

লিচু

লিচু

লিচু গ্রীষ্মকালীন একটি সুস্বাদু ফল। লাল খোসা, আকারে গোল নয়, খোসা মসৃণ নয়। গায়ে উঁচু কাঁটার মতো। এ খোসা খুবই ভঙ্গুর। সহজেই ভেঙে যায়। খোসার নিচে ফলের শাঁস সাদা এবং রসালো। স্বাদে মিষ্টি। ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে লিচুর পরিচিত ও ফলন হয়েছিল চীনে। এ ফলের অনেক গুণ।

চীনদেশীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ফল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করে থাকে। হাইপারটেনশন থাকলেও এ ফল উপকারী। আর কিডনি, লিভার বা ফুসফুসের কোনো অসুখ থাকলে এ ফল খাওয়া আরও ভালো। লিচুতে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ প্রচুর। এ ফলে ডায়াটারি ফাইবারও রয়েছে কিছুটা। ফলের মিষ্টত্বের অর্ধেকটা আসে ফ্রুকটোজ থেকে আর বাকি অর্ধেকটা গ্লকোজ থেকে। এর সঙ্গে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফসফরাসের পরিমাণও প্রচুর। আয়রনও রয়েছে এতে। এ ফলে ক্যালরির পরিমাণ কম। একটা লিচুতে মোটামুটি ৭ ইউনিট ক্যালরি থাকে। শুধু তাই নয়, লিচুর বীজেরও নানা গুণ আছে। এ ফলের বীজ ক্লান্ত শরীরকে চনমনে করে। স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে গেলে তা সারাতেও লিচুর বীজ অনবদ্য। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে লিচু রপ্তানি হয় চীন থেকে। তার আগে সেখানকার লোকেরা এ ফলের অস্তিত্ব সম্পর্কে কিছুই জানত না। অস্ট্রেলিয়ার সোনার খনিতে কিছু চীনদেশীয় শ্রমিক কাজ করতে গিয়ে এ ফলের প্রচার করে। তবে আমরা যেভাবে লিচু খেয়ে অভ্যস্ত চীনারা কিন্তু এ ফল মোটেই সেভাবে খায় না। চীনের লোকেরা লিচুকে শুকনো ফল হিসেবে খায়। এ ফল শুকিয়ে নিলে বেশ শক্ত রূপ নেয়। তখন বাদামের মতো ভেঙে খাওয়া যায়। তবে অস্ট্রেলিয়ায় এখন লিচুর ফলন যথেষ্ট বেড়ে গেছে, সে দেশে এখন বছরে ৫ হাজার টন লিচু উৎপাদিত হয়। লিচু কাশিতে আরাম দেয়। গ্যাস্ট্রাইটাইটিস, টিউমার বা এনলার্জমেন্টের ক্ষেত্রেও লিচু উপকারী। পেটে আলসার নিয়ে এক রোগী জানিয়েছেন ৬-৭টা লিচু খাওয়ার পর অন্যান্য খাবার খেতে তার রুচি বেড়ে যায়। তবে চীনের বিশেষজ্ঞদের মতে, লিচু পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। বেশি খেলে অনেক সময় জ্বর এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা থাকে। স্বাদে মিষ্টি হলেও এ ফল দেখে বুঝে কেনা দরকার। না হলে খেতে ভালো না হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। একটু লালচে খোসা দেখে ক্রয় করতে হয়। নরম লিচু কখনো ক্রয় করা উচিত নয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন ডালের কিছুটা অংশ ফলের সঙ্গে লাগানো থাকে। লিচু কখনো ডাল বা পাতা ছাড়া পৃথক কেনা উচিত নয়।              

                  আফতাব চৌধুরী

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর