ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সব কটি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীদের সুবিধা হলো সরকারে থাকলে তারা সরকারবিরোধী যে কোনো আন্দোলনের জন্য হয় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত অথবা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’কে অথবা পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইএসআই’কে দায়ী করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তাদের প্রতিপক্ষ কোনো দলকে তারা ‘স্বাধীনতার শত্রু,’ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী’, ‘স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি,’ ‘পাকিস্তানের দালাল’ এবং ‘রাজাকার,’ ‘আলবদর’ ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করে এবং তাদের ‘এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ হাঁক দিয়ে পাকিস্তানে চলে যেতে বলে। আবার বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে তখন তারা আওয়ামী লীগ এবং সমমনা দলগুলোকে ‘ভারতের দালাল’ বলে। কেবল বিএনপি নয়, ভারত ও আওয়ামী লীগবিরোধী বাংলাদেশের যে কোনো দল আওয়ামী লীগকে ‘ভারতের দালাল’ তো অবশ্যই বলে, কট্টর ভারতবিরোধী উগ্র সংগঠনগুলো আরও নির্দয়ভাবে আওয়ামী লীগারদের ‘ভাকু’ (ভারতীয় কুকুর বা কুত্তা) এবং ‘ভারতীয় রাজাকার’ বলতেও দ্বিধা করে না।
বাংলাদেশে যারা কট্টর পাকিস্তানবিরোধী, তারা রাজনীতিবিদ হোন বা বুদ্ধিজীবী হোন, হরহামেশাই তাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতে বলেন যে পাকিস্তান বাংলাদেশকে তাদের কলোনি বানিয়ে রেখেছিল। তারা আরও অভিযোগ করেন যে পাকিস্তানপন্থিরা বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের কথাবার্তা থেকেই স্পষ্ট যে তারা অপরিপক্ব বুদ্ধিসম্পন্ন এবং চিন্তাভাবনায় দৈন্যের পরিচয় দেন। ভারত ভেঙে যখন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয় তখন পুরোনো ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোই তাদের এশিয়া ও আফ্রিকার কলোনি থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে নিতে শুরু করেছিল এবং নতুন করে কোনো ঔপনিবেশিক শক্তির আবির্ভাব ঘটেনি। তত দিনে আন্তর্জাতিক আইনকানুন শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল, কারও দ্বারা কোনো দেশ দখল করে উপনিবেশে পরিণত করা সম্ভব ছিল না। অতএব পাকিস্তান জন্মলাভ করার সঙ্গে সঙ্গে একটি ঔপনিবেশিক শক্তিতে পরিণত হয়েছিল, এমন যারা ভাবেন, তাদের মস্তিষ্কের স্থিরতা নিয়ে সন্দেহ করা যেতে পারে।
পাকিস্তান কি ঔপনিবেশিক হওয়ার মতো কোনো দেশ? ভারতের সঙ্গে তিনটি যুদ্ধে পাকিস্তান কুলিয়ে উঠতে পারেনি। নিজেদের দেশকে প্রায় আট দশকে স্থিতিশীল করতে পারেনি, দেশের অর্ধেকটা প্রায় বিনা যুদ্ধে খুইয়েছে এবং অর্থনীতি চলছে ধুঁকে ধুঁকে, সেই পাকিস্তানকে ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে গণ্য করা হলে প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানকে তার মর্যাদার চেয়ে অধিক মর্যাদা দেওয়া হয়, যে মর্যাদা পাকিস্তানের কখনো প্রাপ্য ছিল না, এখনো নেই এবং ভবিষ্যতেও হবে না। পাকিস্তানের পক্ষে অমন শক্তি অর্জন করা অসম্ভব এক ব্যাপার। বাংলাদেশের জন্য আশার কথা যে এখন পর্যন্ত প্রতিবেশী কোনো দেশের রাজনৈতিক দল, সাম্প্রদায়িক বা উগ্র গ্রুপ, এমনকি বাংলাদেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ‘বাংলাদেশের দালাল’ হিসেবে বিভূষিত হওয়ার সম্মান পায়নি। পাকিস্তান বা ভারতের কাউকে ‘ডিজিএফআই’-এর চর হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়নি।
একে ওকে ‘দালাল’ চিহ্নিত করার রাজনৈতিক ব্যাধি পাকিস্তানে আরও প্রবল। কে কাকে কোন দেশের দালাল বলছে, তার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। বাংলাদেশে কোনো ধর্মীয় রাজনৈতিক সংগঠনকে সাধারণত ভারতের অনুরাগী হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তানের প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানকে ‘ভারতের দালাল’ বলা হয়। পরিস্থিতি সেখানে এমন যে ইমরান খান যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালন করছিলেন, তাঁর সরকারের বিরোধিতায় অতিষ্ঠ তিনি এক সাক্ষাৎকারে মুখ ফসকে বলে ফেলেন, ‘যে দেশে মাওলানা ফজলুর রহমানের মতো কোনো ব্যক্তি থাকে, সে দেশে বাইরের কোনো দুশমনের প্রয়োজন পড়ে না।’
ভারতের যে কোনো মুসলিম নাগরিক উগ্র হিন্দুদের কাছে এক একটা খাঁটি পাকিস্তানি। তাদের চোখে পাকিস্তানের প্রতি ভারতীয় মুসলমানদের বিশ্বাস এত প্রবল যে খোদ পাকিস্তানিরাও হিন্দুস্তানি মুসলমানদের মতো ‘খাঁটি পাকিস্তানি’ নয়। এজন্য উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাছে ভারতীয় মুসলিমরা চরম নিগৃহীত। এ নিগ্রহ এত নির্মম ও নগ্ন যে কোনো ক্রিকেট টুর্নামেন্টে পাকিস্তানি ক্রিকেট টিম বিজয় লাভ করলে পাকিস্তান টিমের কোনো কোনো ভারতীয় ফ্যান প্রকাশ্যে আনন্দন্ডউচ্ছ্বাস পর্যন্ত করতে পারে না হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে। উগ্র হিন্দুরা ভারতীয় মুসলমানদের বলে পাকিস্তান চলে যেতে। কারণ মুসলিমবিরোধী উগ্র দলগুলোর মতে, ‘ভারতে বসবাসকারী মুসলমানদের দেহটাই শুধু ভারতে, তাদের অন্তর পাকিস্তানে।’ বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের ক্ষেত্রেও সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলো একই কথা বলে, ‘হিন্দুদের দেহ বাংলাদেশে, মন ভারতে’ অথবা ‘তাদের এক পা বাংলাদেশে, আরেক পা ভারতে।’
দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হলে হৃদয় ও শরীরের নিবিড় সম্পর্ক থাকতে হবে দেশের সঙ্গে। এ প্রসঙ্গে ভারতে মোগলদের অবক্ষয়ের যুগে ১৭৩৯ সালে ‘দিল্লি লুণ্ঠনকারী’ হিসেবে খ্যাত পারস্য শাসক নাদির শাহর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঘটনা মনে পড়ে। মোগল বাহিনী তখন আর অজেয় ছিল না। এ সময় ভারতে অভিযান চালান নাদির শাহ। ভারত দখল নয়, ভারতের সম্পদ লুণ্ঠন ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। দিল্লির কাছে কর্নালে এক যুদ্ধে তাঁর বাহিনীর হাতে মোগল বাহিনী পরাজিত হলে মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহ রঙ্গিলা নাদির শাহর কাছে দূত পাঠান। দিল্লি আক্রমণ না করার শর্তে বিপুল সম্পদ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু মোগলরা প্রতিশ্রুত সম্পদ পরিশোধে টালবাহানা শুরু করে। দিল্লির ব্যবসায়ীরা পারসিক বাহিনীর কাছে রসদ বিক্রয় বন্ধ করে দেয়। এমনকি তাদের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজন ইরানিকে হত্যা করে। নাদির শাহর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। হিন্দুস্তানিদের প্রতারণা ও বিরূপ আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি তাঁর বাহিনীকে নির্দেশ দেন দিল্লিতে ধ্বংসলীলা চালাতে ও যত সম্পদ পাওয়া যায় তা লুণ্ঠন করতে।
রাতে তিনি লালকেল্লায় মোগল দরবারে মোহাম্মদ শাহর সঙ্গে প্রমোদ উপভোগ করেন। এরপর শয়নকক্ষে গেলে তাঁকে সেবা দিতে কক্ষে আগমন ঘটে এক সদ্যযৌবনা সুন্দরী তরুণীর। নাম নূর বাঈ। নাদির শাহ তাঁকে উপভোগ করেন এবং সন্তুষ্ট হয়ে প্রচুর উপহার দেন। যে কদিন তিনি দিল্লি অবস্থান করেন, নূর বাঈ দেহ ও হৃদয় দিয়ে পারস্য সম্রাটকে অকাতর সেবাদানে কুণ্ঠিত হয়নি। প্রতিবার চরম পরিতৃপ্তি লাভ করে সম্রাট উপঢৌকনে নূর বাঈয়ের নগ্ন দেহ ঢেকে দিয়েছেন। মোগল সম্রাটের প্রতিশ্রুত সম্পদ আদায় করা ছাড়াও কৌশলে বিখ্যাত হীরক ‘কোহিনূর’ এবং বহুমূল্যের ‘ময়ূর সিংহাসন’ হাতিয়ে নিয়ে নাদির শাহ দিল্লি ত্যাগের প্রস্তুতির সময় তরুণী নূর বাঈকে প্রস্তাব দেন তাঁর সঙ্গে পারস্যে যেতে। তরুণী দৃঢ়তার সঙ্গে এই বলে প্রবল ক্ষমতাধর পারস্য শাসককে বলে যে মহামহিম যত দিন দিল্লিতে থাকবেন তত দিন সে তার সর্বস্ব দিয়ে তাঁকে সেবা করবেন। কিন্তু সম্রাট যদি তাকে দিল্লি থেকে নিয়ে যেতে চান তাহলে সে বিষপানে আত্মহত্যা করবে। মহান পারস্য সম্রাট শুধু তার দেহ নিয়ে যেতে পারবেন। নাদির শাহ উপলব্ধি করেন ‘একটি নারীদেহে যদি হৃদয়ই না থাকে, তাহলে সে দেহের কি মূল্য থাকে!’
হতে পারে পুরোটাই কল্পকাহিনি। তা সত্ত্বেও এটা তো কল্পনা করা যায় যে পুরুষের সম্ভোগের জন্য গড়ে তোলা বেশ্যাতুল্য এক তরুণীর মাঝে যে দেশপ্রেম দেখানো হয়েছে, এতটুকু দেশপ্রেমও যদি আমাদের কোনো রাজনীতিবিদের মাঝে থাকত, তাহলে ‘এই দেশ আমার বাবার দেশ!’ ‘এই দেশটা আমার দেশ!’ ‘আওয়ামী লীগের দেশ!’ এসব বাগাড়ম্বরের কোনো প্রয়োজন পড়ত কি? আমাদের ভারতমুখী রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেশপ্রেমের পরিবর্তে ভারতের দালাল হওয়ার প্রবণতা অধিক। যাদের অক্ষমতা বেশি বা যোগ্যতা কম, তারাই হম্বিতম্বি ও আস্ফালন করে বেশি। দেশে শেখ হাসিনা আস্ফালন করেছেন এবং গোপনে ভারতকে সন্তুষ্ট করার জন্য যা যা করা এবং যা যা দেওয়ার সবই দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি তাঁর উদারতাকে প্রফুল্লচিত্তে স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি ভারতকে যা দিয়েছি সেটি তারা সারা জীবন মনে রাখবে।’ ২০২৪-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত সাড়ে ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকার ভারতের সঙ্গে অন্তত ২০টি চুক্তি ও ৬৬টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এসবের অধিকাংশের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ জড়িত নেই। কেবল ভারতকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই করা হয়েছে। সে কারণে আওয়ামী লীগ ভোটে নির্বাচিত হয়ে হোক অথবা ফ্যাসিবাদী কায়দায় ক্ষমতায় থাকুক, তা ভারতের নীতিনির্ধারকদের কাছে এবং দিল্লির ক্ষমতায় বিজেপি বা কংগ্রেসের সরকার, এমনকি কোয়ালিশন সরকার থাকলেও তারা বাংলাদেশের ক্ষমতায় আওয়ামী লীগকে দেখতে স্বস্তিবোধ করে। তারা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীকে ভারত সীমান্তের সামান্য অভ্যন্তরে পেয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার অভিযোগে কারাগারে আটকে রাখে; বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকেও একই কারণে আট বছর কারারুদ্ধ রাখে। কিন্তু আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা, যারা ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত সাড়ে ১৫ বছর দেশবাসীর ওপর জুলুম হত্যা গুম চালিয়ে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ও নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত ছিল, তারা সরকার থেকে উৎখাত হওয়ার পর প্রাণভয়ে বিনা ভিসায় সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করলে ভারত সরকার তাদের হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী ‘অতিথি দেব ভব’ বা ‘অতিথি হলো দেবতুল্য’ বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছে। কেবল আশ্রয় নয়, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও উসকানি দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে। তারা তাদের দালালির উপযুক্ত পুরস্কার লাভ করছে ভারত সরকারের কাছ থেকে।
আওয়ামী শাসনামলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ভারতভক্তিতে গদগদ হয়ে বলেছিলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো। অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর মতো। স্বামী-স্ত্রীর খুনশুটির মতো টুকটাক মতানৈক্য থাকলে মিটেও যায়।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন^য়ক নুসরাত তাবাসসুম মন্ত্রীর নতজানু বক্তব্যের পাল্টা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো নয়, বরং প্রতিবেশীসুলভ আচরণ হওয়া উচিত।’ কিন্তু বাস্তবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অধিকাংশের মতে, মনিব ও ভৃত্যের সম্পর্কের মতো। এ সম্পর্কের চিত্র বোঝার জন্য সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোই যথেষ্ট। ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ৫২২ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। শুধু ২০২৩ সালে বিএসএফের গুলিতে ৩১ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের পাল্টা কোনো ভারতীয় নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেনি। দুই দেশের সম্পর্ককে যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ধরে নেওয়া হয় তাহলে ভারত নিঃসন্দেহে স্বামী এবং অসৎ স্বামী তার স্ত্রীকে ভাড়ায় খাটাতে পারে, অন্য পুরুষের কাছে বেচেও দিতে পারে। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই ভারত বাংলাদেশের প্রতি এহেন হীন মানসিকতাই প্রদর্শন করে আসছে। ভারত আঞ্চলিক পরাশক্তি হওয়ার নেশায় তার বৃহদায়তন, বিপুল জনগোষ্ঠী ও প্রভাবশালী অবস্থানকে অপব্যবহার করে বাংলাদেশের জনজীবনকে বারবার ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এবারও বাংলাদেশবিরোধী শক্তিতে আশ্রয়প্রশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে উসকানি দিতে সব ধরনের ইন্ধন জোগান দিচ্ছে, যা কিছুতেই সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ হতে পারে না।
তরুণ হিন্দি কবি শুভম শ্যাম লিখেছেন :
‘হুকুমাত কো হারনে কা খৌফ না রাহে/বরনা দেশ মে খৌফ কি হুকুমাত হো জায়েগি/বিকনে ওয়ালে কো ফানকার কাহেঙ্গে লোগ ইয়াহা/দেশ লুটনে ওয়ালে কো সরকার কাহেঙ্গে লোগ ইয়াহা/জিসনে খামোশি সে উমর লাগাদি দেশ কি সেবা মে/হক্ক কো বাত কারেগা তো গাদ্দার কাহেঙ্গে লোগ ইয়াহা।’ (অর্থ : সরকারের মাঝে যদি হেরে যাওয়ার ভয় না থাকে, তাহলে দেশে ভীতির রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। যারা বাজারে বিক্রয়যোগ্য, লোকজন তাদের শিল্পী বলে/যারা দেশকে লুণ্ঠন করে লোকজন তাদের সরকার বলে/যারা মুখ বুজে সারা জীবন দেশের সেবা করেছে, তারা সত্যের পক্ষে বললে লোকজন তাদের বিশ্বাসঘাতক বলে)।
♦ লেখক : যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক ও অনুবাদক