কুড়ি বছরের ইতিহাসে এবার এইচএসসিতে সর্বনিম্ন ফলের রেকর্ড দেখতে হয়েছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পাসের গড় হার ৫৮ দশমিক ৮৩। ফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ বছর ফেল করেছেন ৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। গত বছরের চেয়ে তা ৭৬ হাজার ৮১৪ জন কম। দেশের ২০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাসই করেননি। শতভাগ পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কমেছে ১ হাজার ৪৩টি। ভয়াবহ এই ফল বিপর্যয় নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। কারও কারও মতে, এটাই প্রকৃত ফলাফল। অতিরঞ্জিত যে ফলাফল বিগত বছরগুলোতে দেখানো হয়েছিল, এবার তা হয়নি। কারও কারও মতে, সরকার পরিবর্তনের পর আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পড়ালেখায় মন দেয়নি। শিক্ষার মানও তলানিতে নেমেছে। সিলেবাস, পরীক্ষাপদ্ধতি, প্রশ্নপত্র, নম্বর দেওয়ার ধরন নিয়েও কথা হচ্ছে। কথা হোক, হতে হতে একসময় দশ কথার এক কথা বেরিয়ে আসবে। আসবে নতুন কথা, নতুন প্রশ্ন। মিলবে জবাবও।
নগদে তো প্রশ্ন উঠেই গেছে, কেবল ক্যাডেট কলেজ নয়- সেনাবাহিনী পরিচালিত অন্য কলেজগুলোও কীভাবে এমন চমৎকার রেজাল্ট করল এই প্রশ্ন ও পরীক্ষাপদ্ধতিতেই। এইচএসসি পরীক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৭টি বাংলা মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১৭ হাজার ১৫৬ জন, ১২টি ইংরেজি মাধ্যম থেকে ৯৭১ জন এবং ১২টি ক্যাডেট কলেজ থেকে ৫৮৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। মোট ৬১টি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী ১৮ হাজার ৭১৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ হাজার ৮২৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ০৫ ভাগ এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার হার ৩৬ দশমিক ৪৭। তাদের জন্য তো আলাদা প্রশ্ন হয়নি। তাহলে কীভাবে এমন ফলাফল করলেন তারা? দেশের সব মেধাবী সেনাবাহিনী পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে পড়েছেন? তারাই দেশের একমাত্র মেধাবী? অথবা তাদের যারা পড়িয়েছেন তারাই দেশের সেরা শিক্ষক? ব্যাপক বিশ্লেষণে না গিয়ে বলা যায়, এই কৃতিত্বের মূল চালিকাশক্তি হলো ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজগুলোর শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশ। নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিবিড় পরিচর্যা। সেই সঙ্গে সেনা সদরের সার্বিক দিকনির্দেশনা, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সার্বক্ষণিক তদারকি। পুরো বিষয়টিই নিয়মিত চর্চার।
আসলে কেবল সমরে নয়, এর বাইরেও শৃঙ্খলা-নিয়মানুবর্তিতার একটা বিষয় রয়েছে। সেনাবাহিনী সেটার চর্চা করছে বলে তারা কামিয়াব। তাদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোও সফলকাম। এবারের এইচএসসির ফলাফল এর একটা নগদ প্রমাণ। কিন্তু তা শুনতে-মানতে ভালো না লাগার একটি মানসিকতা রয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় সেনাবাহিনী মাঠেঘাটে কাজ করছে। জনগণ তা নিয়মিত দেখছে। তাদের কাজের ধারা ও ধরন দেখেও কি বোঝার কিছু বিষয়-আসয় থাকতে নেই? জাতি এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতীক্ষায়। সরকারের বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওয়াদাদৃষ্টে চমৎকার একটি নির্বাচনের জন্য উন্মুখ জাতি। কথার কথা নয়, ফেব্রুয়ারিতে সেই নির্বাচন আয়োজনে চলছে কমিশনের কর্মযজ্ঞ। এই দুইয়ের ফাঁকে চলছে সেনাবাহিনীকে বিরক্ত-বিব্রত করার আয়োজন। এর উদ্দেশ্য পরিষ্কার। অনেকের মতো এই চক্রটিও জানে সেনাসম্পৃক্ততায় নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু করার একটি পথরেখা ঠিক করা হয়েছে। এদের কাছে তা অসহ্য-অনাকাক্সিক্ষত। এমনকি ভয়ের।
দুর্যোগ-দুর্বিপাকসহ জাতীয় নানা প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর ওপর ভরসা করার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের মতো বিশ্বের কম দেশেই আছে। আবার সেনাবাহিনী নিয়ে অবান্তর কথা, আজেবাজে নেরেটিভ তৈরির প্রবণতাও বিশ্বে বিরল। বাংলাদেশে বিস্ময়করভাবে হিম্মত-সাহস-স্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে সেনাবাহিনী নিয়ে হালকা কথা চালাচালির বাতিক রয়েছে। আরোপিত দোষারোপ, উড়িয়ে দেওয়া, গুঁড়িয়ে দেওয়া, ইট খুলে ফেলা, বিলুপ্ত করে দেওয়ার মতো কিছু একটা বলে কিছুদিন ঝিম মেরে থাকার মহলটি আবার তৎপর। তাই সেনাবাহিনী নিয়ে আবারও তাদের আচানক-আজগুবি, রাতের ঘুম নষ্ট করা গুজবের হাট। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এ চক্র বেশি তেজোদ্দীপ্ত। প্রায় প্রতিদিনই সেনাবাহিনী সম্পর্কে ছাড়া হচ্ছে কোনো না কোনো গুজববটিকা। কখনো সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের বা সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁর অধস্তনদের কল্পিত বিরোধের কেচ্ছা ছড়ানো হচ্ছে মুখরোচক করে। এবারের নির্বাচন একটি মহাইমানি পরীক্ষা ইসির জন্য। নির্বাচনের মুখ্য দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হলেও তা কেবল তাদের একার নয়। এখানে প্রার্থী, ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অংশীজন অনেক। ইসি অনেকটা রেফারির মতো। আর আম্পায়ারিংয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলতে মানুষ আগে চিনে পুলিশকে। তারপর সেনা, র্যাব, বিজিবি, আনসার। বাস্তবতা হচ্ছে, পুলিশ এখনো ট্রমাগ্রস্ত। গেল সরকার আমলে নানা ক্রিয়াকর্মে পুলিশ হয়ে যায় জনতার প্রতিপক্ষ। ঘৃণার ওই জায়গা থেকে পুলিশ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এর বিপরীতে সেনাবাহিনী চলে এসেছে আরও ভরসা ও আস্থার জায়গায়। এ বাস্তবতা সহ্য না হওয়া মহল ভুগছে খুব মনোবেদনায়।
গেল সরকার নির্বাচনকালীন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকেই তাদের খারিজ করে দিয়েছিল। এবার আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২’ সংশোধন করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে আবারও অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা আর প্রয়োগকারীর মধ্যে বেশ ফারাক আছে। ভোট দেওয়া ভুলে যাওয়া মানুষের বিশ্বাস, নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালনে সুফল আসবে। এই বিশ্বাস থেকেই ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরপিও সংশোধন করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো বা সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কেবল জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই নয়, পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইনেও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার ওই সংশোধনী অধ্যাদেশে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো বাদ দেয়। এবার সেখানে আশাবাদের খবর। মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে- এ আশা ও নিশ্চয়তা গণতন্ত্রকামী যে কারও জন্যই অত্যন্ত কাক্সিক্ষত। তাই নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। জন-আকাক্সক্ষার পারদেও টোকা পড়েছে। আন্তর্জাতিক মহলও আশা করে, আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। এ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের অভিপ্রায় সেই আশাবাদে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।
এমন আগ্রহ ও আশাবাদ বরবাদ করতে তাই আগেভাগেই সেনাবাহিনীকে বিরক্ত ও জনগণের মুখোমুখি করার এজেন্ডা। আলোচিত গুম কমিশনকে বানিয়ে ফেলা হচ্ছে সেনাবাহিনীর বিচারের কমিশন। একটা সূক্ষ্ম নেরেটিভ তৈরি করে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে কুকর্মে জড়িত সেনাসদস্যদের বিচার। সেনা সদর থেকে বিষয়টি ঝরঝরেভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে। লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার ভয়েসে জানানো হয়েছে, গুমে জড়িত অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা ২৫ কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন এখনো সেনাবাহিনীতে কর্মরত। একজন অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে। এই ১৬ জনের মধ্যে মাত্র একজন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ আত্মগোপনে।
তার বিষয়েও বিচারিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনী থেকে। তাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। খুঁজে বের করার চেষ্টাও চলছে। তারা অভিযুক্ত। অভিযোগ প্রমাণের বাকি। তারপরও সেনাবাহিনী বিচারে বাগড়া দেয়নি। সাফ কথায় জানানো হয়েছে, ‘নো কম্প্রোমাইজ উইথ ইনসাফ’। ট্রাইব্যুনাল আইন ও সেনা আইনকে মুখোমুখিও করেনি। বরং আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে সহায়তা দিচ্ছে। গুমসংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় কমিশনকে সেনাবাহিনী শুরু থেকেই সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতা করেছে। নথি সরবরাহও করেছে। সাক্ষাৎকার নেওয়ার ব্যবস্থাও করেছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর অভিযুক্তদের পরিবার থেকে আলাদা করে সেনা হেফাজতে এনে সেনাবাহিনী এ বিচারে সহায়তা করছে। গুমের শিকার পরিবারগুলোকে গভীর সমবেদনাও প্রকাশ করেছে। অথচ বিচার বা রায়ের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল, পাবলিক ট্রায়াল সব করে ফেলা হচ্ছে। ব্যক্তির অপরাধে গোটা বাহিনীকেই কাঠগড়ায় নিয়ে আসার নেরেটিভ চর্চা হচ্ছে নিদারুণভাবে। ডিজিএফআইসহ গোয়েন্দা সংস্থাকে হয় বিলুপ্ত, নইলে অকর্মণ্য ঘোষণার সবকও দেওয়া হচ্ছে। এ সবক দেওয়া ব্যক্তিরাও ভালো করে জানেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। এটি কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়। আরও জানেন, ঘটনাকালে অভিযুক্তদের কেউই সেনাবাহিনীর সরাসরি কমান্ডের অধীনে কর্মরত ছিলেন না। ডিজিএফআই বা র্যাবে ছিলেন ডেপুটেশন বা প্রেষণে। এ বাহিনীগুলো সেনাবাহিনীর অধীনে নয়। বিশেষ করে ডিজিএফআই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে। সেনাবাহিনীর কমান্ড কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত নয়। অভিযুক্তদের কর্মকান্ড সেনাবাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক কমান্ডের বাইরে। তাদের সম্পর্কে সেনা সদরের পক্ষে অবগত হওয়া বা নজরদারি করার ব্যবস্থাই নেই। আর র্যাব স্বরাষ্ট্রের অধীনে।
এমন স্বচ্ছতা জানান দেওয়ার পরও গোটা সেনাবাহিনীকে নিয়ে নেরেটিভ তৈরির ধুম। এরাও ভালো করে জানে, চব্বিশের চেতনা সমুন্নত রাখতে, দেশকে গতিময় করতে সামনের নির্বাচনকে ঐতিহাসিক, প্রশ্নমুক্ত, অবাধ, সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার কোনো বিকল্প নেই। তা জেনেবুঝেই সেনাবাহিনীকে আগেভাগে ঠেক দিয়ে রাখতে তাদের যত আয়োজন। আর আইনশৃঙ্খলার প্রতীক বলতে মানুষের সবার আগে চোখ যায় পুলিশের দিকে। পুলিশ কোন দশায় আছে তা ব্যাখ্যা করে বলার দরকার নেই। সেখানে বিশেষ ভরসা সশস্ত্র বাহিনী। তারা ম্যাজেস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে আছে। আসন্ন নির্বাচনের সময়ও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়েই তারা মাঠে থাকবে, যা নির্বাচনে হাইভোল্টেজ কোরামিন হয়ে কাজে দেবে বলে প্রত্যাশা মানুষের। একদিকে জন-আকাক্সক্ষা, অন্যদিকে মাঠের বাস্তবতা বুঝে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর একটি সুযোগ ও বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তা মালুম করে এখন থেকেই সেনাবাহিনীকে টার্গেট করেছে একটি মহল। তারা কোনোক্রমেই তা হতে দিতে চায় না। এরা দেশে পরীক্ষণ-শিক্ষণ-নির্বাচন কোনোটাই ঠিকভাবে চায় না। তাই সেনাবাহিনী নিয়ে তাদের পরিকল্পিত নানা আখ্যান। যাদের এ বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, তাদের দিয়েও কচলানো হচ্ছে নানা কথা।
দেশ গঠনে এবং দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে শৃঙ্খলা, নিয়মনীতির কত আবশ্যকতা। দেশজুড়ে এইচএসসির চরম ফল বিপর্যয়ের মাঝে সেনাবাহিনী পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলো তার একচিলতে উদাহরণ মাত্র। এখান থেকে সামনের নির্বাচন, দেশ পুনর্গঠন, প্রশাসন, রাজনীতি, অর্থনীতির জন্য ভাবনার অনেক কিছু রয়েছে। এর বাইরে বাস্তবতার বিপরীতে গিয়ে সেনাবাহিনীকে বিব্রত করে, খোঁচা দিয়ে, গুজব রটিয়ে কেবল হাইপ তোলা যাবে। জাতিকে-দেশকে অবান্তর কথা-কাজে মত্ত রাখা যাবে। এর বেশি কিছু নয়। এসব করে যে সেনাবাহিনীকে খ্যাপানো-চটানো, একপেশে বা দলীয় করা যাবে- তা দুরাশাই থাকবে।
♦ লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট