প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের তালিকায় মহাবিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত সাম্বার হরিণ রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। মহাবিপন্ন প্রাণীটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি এর পাচারের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
সাম্প্রতিককালে কয়েকটি সাম্বার হরিণ উদ্ধার ও হত্যার ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, একসময় পাহাড়ি বনাঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দা ছিল সাম্বার হরিণ। এখন প্রাণীটি পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু বিচ্ছিন্ন বনে টিকে আছে। এশিয়ার বনাঞ্চলে সাম্বার হরিণকে ‘সংকটাপন্ন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে আইইউসিএন। তবে বাংলাদেশে এটি ‘মহাবিপন্ন’ প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। মূলত চোরাশিকার ও বন ধ্বংসের কারণে দেশে সাম্বার হরিণের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।
বেলা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সাম্বার হরিণ আকারে বড়। দেশে-বিদেশে এর চামড়ার চাহিদা রয়েছে বেশ। এসব কারণে শিকারিদের অন্যতম লক্ষ্য হয়ে উঠেছে সাম্বার হরিণ। এ ছাড়া গভীর অরণ্য সাম্বার হরিণের প্রাকৃতিক আবাসস্থল। ক্রমাগত বন ধ্বংসের কারণে প্রাণীটি বাসস্থান সংকটে পড়েছে। ২০২১ সালের ১০ মে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ির লুলাংছড়ি গ্রাম থেকে একটি সাম্বার হরিণের শাবক উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। পরে সেটিকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে স্থানান্তর করা হয়। ২০২৪ সালের ৭ মার্চ রাঙ্গামাটির লংগদুর ভাসান্যদমে এক ব্যক্তি সাম্বার হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রির জন্য জবাই করেন। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২৭ জুন কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদী থেকে উদ্ধার করা একটি সাম্বার হরিণ মারা যায়।
চিঠিতে বেলা লিখেছে, সাম্বার হরিণ শিকার এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যথাযথ ও কঠোর পদক্ষেপের অভাবে এসব শিকার প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ঘাটতির কারণে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে, যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার পরিচায়ক। মহাবিপন্ন সাম্বার হরিণসহ বিপদাপন্ন, বিপন্ন ও বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা সব বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে।