দিনাজপুর জেলায় টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। টমেটো চাষ করে এবার কৃষকরা খুশি। এ মৌসুমে টমেটো প্রতিদিন ৩০ লাখ থেকে ৫৫ লাখ টাকার টমেটো বেচাকেনা হচ্ছে বাজারে।
টমেটো চাষীরা জানিয়েছেন, এবার ফলন ভালো হয়েছে , দামও ভালো পাচ্ছেন কিন্তু বিরূপ আবহাওয়া না থাকলে উৎপাদন আরও বেশি হতো। তবে সরকারিভাবে টমেটো সংরক্ষণ এবং বিপণনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকলে সারা বছর এলাকার টমেটো সারা দেশে ক্রেতাদের সরবরাহ করা যেতো। এই টমোটো উৎপাদনও বেশি এবং কৃষকের লাভও বেশি। তবে এ সময়ে অনেক টমেটো প্রক্রিয়াজতকরণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় নষ্ট হয়ে যায়।
চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৪শ' ১৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ করে উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৮০হাজার টন টমেটো বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে।
সরকারসহ বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে এসে টমেটোকেন্দ্রিক শিল্প গড়ে উঠলে এ অঞ্চলের কৃষকরা যেমন লাভবান হবে তেমনি বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানও ঘটবে। এতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিশীলতাও বাড়াবে নিঃসন্দেহে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর জানায়, দিনাজপুর অঞ্চলে দু'ধরনের টমেটো চাষ হয়। একধরনের টমেটো বর্তমান বাজারে এক মাস আগেই উঠেছে এবং বিক্রি হয়েছে। আরেকটি শুধু দিনাজপুরেই হয় সেই টমেটো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এ মাসে এপ্রিল-মে মাসে। এটাকে লেট টমেটো বলে পরিচিত এবং এটার উৎপাদনও বেশি। এক হেক্টরে ১০ থেকে ১৫ টন টমেটো উৎপাদন হয়। এই টমেটো ১৬১৩ হেক্টরে চাষ হয়েছে।
শহর সংলগ্ন গাবুড়া নদীর তীরে শেখপুরার রাজারামপুরে উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় টমেটোর বাজারে কৃষকরা উৎপাদিত টমেটো বাজারজাত করার জন্য আনেন। এই বাজার ভোর ৫টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। এই হাটের টমেটো প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, শরিয়তপুর, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চলে যাচ্ছে ট্রাকযোগে।
ব্যবসায়ীরা এই বাজার থেকে ৫-১০ট্রাক টমেটো কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। প্রতিদিন বাজারে উঠে ৭৫ থেকে ১০০ টন টমেটো।
কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, দিনাজপুরের জমিতে প্রোভেনসিড, ভিকিমা ও চ্যাম্পিয়ন জাতের টমেটো আবাদ হয়। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি চাহিদা প্রোভেনসিড জাতের। এই জাতের টমেটো গাছ থেকে পাড়ার পর ১৫ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। এ কারণে ব্যবসায়ীদের কাছে এই জাতের টমেটোর চাহিদা বেশি থাকায় এর চাষও বেশি হচ্ছে। এছাড়াও চুকা নামের এক জাতের টমেটোর চাহিদা রয়েছে।
শেখপুরা ইউপির ভাট পাড়া গ্রামের টমেটো চাষকারী মতিন জানান, এ বছর তিনি ৫ বিঘা জমিতে টমেটো আবাদ করেছেন। ফলন হয়েছে প্রায় ৫শ মণ । বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ টমেটো ৮শ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকার কাওরান বাজারের টমেটো ব্যবসায়ী জামালউদ্দিন জানান, গাবুড়া বাজার থেকে প্রতি ট্রাকে ১০ থেকে ১৫ টন টমেটো নিয়ে যায়। কিন্তু রাস্তায় চাঁদাবাজীর জন্য তাদের কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।