'বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গা ভইরা লইয়া যায়'- রমজানের সময় সুরে সুরে চকবাজারের ইফতার বিক্রেতাদের এ বাক্য দু'টো সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত। তেমনি চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতারির নামও দেশজুড়ে। তবে শুধু রোজা নয়, শবে বরাতেও চকবাজারের খাবারের দোকানগুলোতে থাকে চমক। শবেবরাতকে সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পুরান ঢাকার অলিতে-গলিতে বিভিন্ন রকমের রুটি আর হালুয়ার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়িরা। আর খাবারে ঠিক সেই শাহেনশাহী ভাবটা আছেই। যদিও এখন আর সেই মোঘল আমল নেই, কিন্তু আজও ইতিহাসের চোরাগলি হয়ে ঐতিহ্য আর রুচির দেখা মেলে পুরান ঢাকার অলিতে গলিতে।
শবেবরাতে যেমন সারারাত ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে কাটাবে মানুষ তেমনি বাড়ি বাড়ি রুটি-হালুয়া বিতরণের মতো ঐতিহ্যবাহী পর্বও চলবে। শবেবরাতের রাতে মিদ্বি হালুয়া এবং এ জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রচলন অনেক পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী। তবে শহরাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ফেন্সিরুটি, তাবু রুটিসহ আফগানি রুটিও পাওয়া যায়। পুরান ঢাকাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে রুটি ও হালুয়া নিয়ে বসে সাধারণ ব্যবসায়িরা। অবশ্য শবেবরাতের প্রস্তুতি সপ্তাহখানেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় ব্যবসায়িদের মধ্যে।
ঢাকা শহরে শবেবরাতকে কেন্দ্র করে রুটি-হালুয়া খাওয়া বা বিতরণের রীতি পুরান ঢাকাতেই বেশি। পুরান ঢাকায় বেশিরভাগ পরিবার শবে বরাতের রুটি কিনে আনে চকবাজার থেকে। নকঁশার রুটির জন্য বিখ্যাত চকবাজার। শাহী মসজিদের সামনে বসে রুটির এ পসরা। এবারও তার ব্যতিক্রমন নয়। বিকেলেই নানা রঙের, আকারের নকশি করা রুটি নিয়ে বসে দোকানিরা। সেগুলোর কোনোটা দেখতে কুলার মতো, কোনোটা মাছের মতো, আবার কোনোটা গোলাকার ও নকঁশা করা। এছাড়া সাত রওজার আনন্দ বেকারি, চকবাজারের বোম্বে বেকারি, জজকোর্ট এলাকার ইউসুফ বেকারির রুটির নামডাক রয়েছে। এসব বেকারিতে শবে বরাত উপলক্ষ্যে মাসকট হালুয়া, লাউয়ের হালুয়া, দুধিয়া হালুয়া, হাফসি হালুয়া, গাজরের হালুয়া এবং বুটের হালুয়া ইত্যাদি বিক্রি হয়।