হলিউডে নির্মিত বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনীর মাধ্যমে আমরা ইতোমধ্যেই কল্পজগৎ সম্পর্কে কমবেশি জানি। বড় বড় চোখযুক্ত প্রানী যেমন আমাদের মনোজগতে হলিউড মারফত প্রবেশ করেছে, তেমনি দৈত্যাকৃতির ভিনগ্রহবাসী প্রানীর চিত্রও আমাদের মস্তিস্ক গ্রহন করেছে। কিন্তু তারপরেও এসবই অবাস্তব, এইটুকু বোধ আমাদের সবারই আছে।
তবে হঠ্যাৎ যদি দেখতে পান, আপনার ঘরের কোনে থাকা মাকড়সাটি আর স্বাভাবিক আকারে নেই, উল্টো অস্বাভাবিক রকমের বড় হয়ে গেছে তাহলে কেমন লাগবে তা একমাত্র আপনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে এতে অবাক হবেন না মোটেও। কারণ সম্প্রতি প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, বিবর্তনের ধারা এবং প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারণে অনেক প্রাণীর আকার পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আর এদের মধ্যে মাকড়সা অন্যতম। ইতোমধ্যেই অনেক স্থানে স্বাভাবিক আকারের তুলনায় আকারে বড় মাকড়সা দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, পৃথিবী পৃষ্ঠের উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাকড়সা শ্রেনির প্রানীদের আকার পরিবর্তিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পৃথিবীর উষ্ণ তাপমাত্রার কারণে মাকড়সার আকার বৃদ্ধি পাবে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, ‘পৃথিবীর যেসব দেশের তাপমাত্রা এতোদিন পর্যন্ত নাতিশীতোষ্ণ ছিল, সেগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে উষ্ণমন্ডলীয় তাপমাত্রার দেশ হয়ে যাচ্ছে। আর মাকড়সা জাতীয় প্রানীর বৃদ্ধির জন্য মধ্য উষ্ণমন্ডলীয় তাপমাত্রা বেশ উপযোগী।’
অধ্যাপক অ্যাডাম হার্ট বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ইনভার্টাব্রেট প্রজাতির প্রানীদের জন্য এবারের গ্রীস্ম বেশ উপভোগ্য হবে। কারণ তাদের বংশবিস্তার এবং সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এই তাপমাত্রা বেশ কার্যকর। এসময় উভয় লিঙ্গের ইনভার্টাব্রেট প্রজাতির প্রানীরাই পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হয়। শীতকালে মাকড়সারা সচরাচর বের হয় না, এসময় পুরুষ মাকড়সারা নারী মাকড়সার সন্ধান করে। আর গরমের সময় নারী মাকড়সারা হন্যে হয়ে পুরুষ মাকড়সা খোঁজে। প্রাকৃতিক নিয়মেই এমনটা ঘটে।’
পাশাপাশি অধ্যাপক হার্ট আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র ইনভার্টাব্রেট প্রজাতির প্রানীদের ক্ষেত্রে নয় আরও অনেক প্রানীর ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটে। যতদিন যাচ্ছে ততই আমরা বিভিন্ন প্রানীর অস্বাভাবিক গড়ন দেখতে পাবো। মানুষের মধ্যেও আমরা ইদানীং অস্বাভাবিক গড়ন দেখতে পাচ্ছি। যা মূলত প্রাকৃতিক শৃঙ্খলা পরিবর্তনের কারণেই ঘটেছে।’