ঈদের ছুটিতে পর্যটকের পদধূলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। প্রতিদিনই সমুদ্র সৈকতের আনন্দ উপভোগ করতে এখানে আসছে অসংখ্য পর্যটক। আর পর্যটকদের বরণে বর্ণিল সাজে সেজেছে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলগুলো। পর্যটকদের নিরাপত্তায় টু্যরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে 'লাইফ গার্ড' কর্মীরাও। তবে দীর্ঘ যানজটের কারণে অনেক পর্যটক আসার ইচ্ছা থাকলেও আসছেন না বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, পর্যটন নগরীতে ছোট-বড় মোট ৩ শতাধিক হোটেল-মাটেল, শতাধিক গেস্ট হাউস ও কটেজ রয়েছে। এসব স্থানে প্রতিদিন দেড় লক্ষাধিক মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কেবল স্থানীয় পর্যটক নয়, দেশী-বিদেশী পর্যটকদের জন্য রয়েছে থাকার সুব্যবস্থা।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান,''টানা ছুটি মানেই কক্সবাজারের পর্যটকের ঢল। এবার ঈদ ও দূর্গপূজার কারণে এ ছুটি অনেক দীর্ঘ। ফলে ব্যাপক পর্যটকের সমাগম দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য বছরের মতো অগ্রীম বুকিং নেই। তারপরও দেশি-বিদেশি পর্যটক আসছে প্রচুর।''
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর সভাপতি কিবরিয়া খান জানান, ''কক্সবাজারে এসেই পর্যটকরা ছুটছেন সৈকতে। নীল জলরাশিতে গা ভাসাতে যেন তাদের উচ্ছাসের শেষ নেই। ঈদের ছুটিতে সৈকতে আসতে পেরে বেজায় খুশি পর্যটকরা।"
হোটেল দি কক্স টুডে জেনারেল ম্যানেজার শাহাব উদ্দিন জানান, ''পর্যটকদের আনন্দ দিতে হোটেল-মোটেল গুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। এছাড়া হোটেলগুলোতে আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানেরও।"
কক্সবাজারের নয়নাভিরাম দৃশ্য এবং হোটেলের বিভিন্ন আয়োজন দেখে মুগ্ধ বেড়াতে আসা হাজার হাজার পর্যটক। পর্যটকরা ঘুরছেন হিমছড়ি, দরিয়া নগর, পাথুরে বীচ ইনানীতে। এছাড়া তাদের অনেকে ছুটছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তারা নিরাপদে গিয়ে ফিরে আসছেন।
ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠান ট্রাভেল টিউন'র নির্বাহী পরিচালক বেলাল আবেদীন ভুট্টো জানান, ''বিগত বছরগুলোতে এমন দিনে দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতেন। এবছর অনেক কমে গেছে। দৈনিক কেবল ৭/৮ শ' পর্যটক এখন সেন্টমার্টিন যাচ্ছেন।"
এদিকে সৈকতে গোসল তথা গা ভেজাতে গিয়ে পর্যটকরা যেন প্রাণহানির শিকার না হয়-সে বিষয়ে প্রস্তুত রয়েছে লাইফ গার্ড সংস্থা গুলো।
রবি লাইফ গার্ডের ইনচার্জ ছৈয়দ নুর জানিয়েছেন, ''আমরা প্রস্তুত। সৈকতের সী ক্রাউন, সী ইন, সী গাল, লাবণী, শৈবাল ও ডায়াবেটিকসহ সব পয়েন্টে 'লাইফ গার্ড' কর্মীরা রয়েছে। তারা প্রতি মুহুর্তে পর্যটকের সেবায় কাজ করছে। তবে নিজেকে বাঁচতে হলে আগে নিজেকেই 'সজাগ' থাকতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, ''জোয়ার-ভাঁটার সময় দেখেই সৈকতে নামতে হবে। ভাঁটায় সৈকত কম নিরাপদ। সাঁতার না জানলে সমুদ্রের বেশি গভীরে না যাওয়া ভাল। "
লাইফ গার্ড কর্মীর পাশাপাশি নিরাপত্তাদানে প্রস্তুত সৈকতের ট্যুরিস্ট পুলিশও। তারা সব ক'টি পর্যটন স্পটে নিরাপত্তাদানে কাজ করছে।
কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার শ্যামল কানি্ত নাথ জানান, ''সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশ আছে। পর্যটকরা যেন হয়রানি শিকার না হয়। তারা সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখবে। এছাড়া চুরি, ছিনতাই এবং ইভটিজিং ঠেকাতেও পুলিশ কড়া সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।"
বিডি-প্রতিদিন/০৮ অক্টোবর ২০১৪/মাহবুব