বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজের কথা মনে হলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে টাইটানিকের নাম। ডুবে গেলেও জাহাজটি মানুষের ভাবনার শেষ নেই। নেই প্রশ্ন আর রহস্যেরও অন্ত। জাহাজটির বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু সিনেমাও। কিন্তু টাইটানিক জাহাজটি ছিল যাত্রীবাহী। তাহলে সবচেয়ে বড় মালবাহী জাহাজ কোনটি? সম্প্রতি ‘দ্য গ্লোব’ নামের একটি জাহাজ বিশ্ববাসীর নজরে এসেছে। যেটিকে কিনা বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মালবাহী জাহাজ।
দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্মিত এই বিশাল জাহাজটির মালিকানা চীন শিপিং কনটেইনার লাইনস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটারেরও বেশি। আরও খোলাসা করে বলতে গেলে আটটি অলিম্পিক সাইজ সুইমিং পুলের সমান এই জাহাজ। প্রস্থে ৫৬ দশমিক ৮ মিটার এবং এর উচ্চতা ৭৩ মিটার। আর এই জাহাজের ধারণক্ষমতা প্রায় এক লাখ ৮৬ হাজার টন, কিংবা বলা ভালো ১৪ হাজার ৫০০ লন্ডন বাসের ওজনের সমান।
বৃহত্তম এই জাহাজটি ২০ ফুট উচ্চতার মোট ১৯ হাজার ১০০টি কনটেইনার সহজেই বহন করতে পারে। পাশাপাশি এই কনটেইনারগুলো সাজালে মোট ৭২ মাইল দৈর্ঘ্য হবে, যা মোটামুটি ফেলিক্সটোভ থেকে লন্ডনের দূরত্ব। এবিষয়ে কনটেইনার বিশেষজ্ঞ ডেমিয়্যান ব্রেট বলেন, ‘গ্লোবের সামনে আপনার নিজেকে বামন মনে হতে বাধ্য। দেখলে মনে হবে আস্ত একটা অফিস পাড়া আপনার সামনে উপস্থিত। আসলেই এটি অনেক বড়।’
দ্যা গ্লোবটি আধাআধি নির্মানের পর প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর তারিখে। চীনের নিঙবো হয়ে এটা বর্তমানে ফেলিক্সটোভে অবস্থান করছে। বিশাল এই জাহাজটি বন্দরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসুক জনতা ভিড় করতে থাকে জাহাজটিকে দেখার জন্য। যদিও জাহাজে কাউকে উঠতে দেয়া হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, জাহাজটি এখনও পুরোপুরি নির্মিত হয়নি। অবশ্য এর কারণও আছে। জাহাজটি নির্মান নিয়ে শুরু থেকেই বেশ ঝক্কি পোহাতে হয় এর কর্তৃপক্ষকে। বেশ কয়েকদফা দরপত্র দিয়েও কোনো সুবিধা হয়নি, কোনো প্রতিষ্ঠানই এতবড় জাহাজ বানানোর ঝুঁকি নিতে চাইছিল না। সর্বশেষে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই হেভি ইন্ডাষ্ট্রি এই জাহাজটি বানাতে সম্মত হয় এবং চলতি বছরের শেষ নাগাদ পুরো জাহাজটি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে পারবে বলে আশা করছে হুন্দাই।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জানুয়ারি, ১৫/মাহবুব