ডিমের মাঝে কি করে তরল থেকে জন্ম নেয় একটি প্রাণী, তা দেখতে পাওয়ার কোনো উপায় নেই। এখন স্বচ্ছ, নরম একটি ডিমের মাঝে দেখতে পাওয়া সম্ভব ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের বিকাশ। মানুষের বিভিন্ন রোগ ও শারীরিক জটিলতার জন্য অন্যান্য প্রাণীর ওপরে গবেষণা করা হয়ে থাকে। অনেক সময়ে এই গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য সম্পূর্ণরূপে নির্ভরযোগ্য হয় না। যেমন যে ওষুধ ইঁদুরের ওপর সফল হয় তা মানুষের ওপর সফল নাও হতে পারে।
এমনিভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিমের ভেতরে থাকা প্রাণীর ভ্রূণের ওপরেও গবেষণা করা হয়। এক্ষেত্রে সমস্যা হলো, ডিমের ভেতরে কি ঘটছে তা দেখা সম্ভব হয় না বা পুরোপুরি দেখা যায় না। এক্ষেত্রে কার্যকরী হবে স্বচ্ছ ডিমের খোসা ব্যবহারের প্রযুক্তি।বেইজিং এর সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করছেন। এর আগে ডিমের মাঝে জীবনের প্রক্রিয়া দেখবার জন্য ব্যবহৃত হতো “উইন্ডোইং” প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে ডিমের খোসার একটি অংশ যত্ন করে আলাদা করে ফেলা হয় এবং এর ভেতরটা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
পড়ে এই অংশটিকে আবার টেপ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় ভেতরের ভ্রূণ আহত বা রোগাক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। এর পাশাপাশি ভেতরের সম্পূর্ণ পরিস্থিতি বোঝা যায় না। ভ্রূণ কালচার করার প্রক্রিয়াটিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফল হয় না। ডিমের খোসা স্বচ্ছ করে ফেলার নতুন এই প্রক্রিয়াটি অতীতের এসব প্রক্রিয়ার চাইতে বেশী কার্যকরী। এই ডিমের খোসা তৈরি হয় PDMS (polydimethylsiloxane) নামের এক ধরণের বায়োম্যাটেরিয়াল। এটি স্বচ্ছ এবং নমনীয়।
এই খোসা সম্পূর্ণভাবে স্বচ্ছ হবার কারণে ভেতরে কী হচ্ছে গবেষকেরা সবটাই দেখতে পাবেন। শুধু তাই নয়, ভ্রূণে বাইরে থেকে কিছু সংযোগ করতে গেলেও সুবিধা হবে। প্রায় দুই বছর ধরে এ নিয়ে গবেষণা চলছে এবং বর্তমানে এর ভেতরে পাখির ভ্রূণ ১৭.৫দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। আশা করা হচ্ছে গবেষণার মাধ্যমে পুরো ২১ দিন (ভ্রূণ থেকে বাচ্চা হবার জন্য দরকারি সময়) ভ্রূণটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ৯ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫/ নাবিল