চৌদ্দ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী তরুণ-তরুণী থেকে শুরু থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মধ্যে উত্তেজনার কমতি থাকে না। প্রত্যেকেই চায় নিজের ভালোবাসার বা কাছের মানুষটিকে নিয়ে দিনটি উপভোগ করতে। বরাবরের মতোই থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের তরুণ-তরুণীদের মাঝেও এর ব্যতিক্রম ঘটে না। তবে এবার দিনটি উদযাপনের জন্য তরুণ-তরুণীদের একটা ভালো পন্থা বাতলে দিয়েছেন ব্যাংকক সিটি কর্তৃপক্ষ। দিনটি উদযাপনের জন্য কর্তৃপক্ষ তরুণ-তরুণীদেরকে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার পরিবর্তে মন্দিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় তরুণীদের মধ্যে সর্বোচ্চ গর্ভবতীর হারের দেশগুলোর একটি হচ্ছে থাইল্যান্ড। এছাড়া সমকামীদের মধ্যে এইচআইভি এইডস সংক্রমণের হারের দিক দিয়ে আফ্রিকার এইডস হটস্পটগুলোর সমতুল্য বলা যায় দেশটিকে।
পর্যটকবান্ধব থাইল্যান্ডে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন হচ্ছে একটি জনপ্রিয় পশ্চিমা রফতানি। তবে ব্যাংকক মেট্রোপলিটান কর্তৃপক্ষ এ দিনে তরুণ-তরুণীদের ভালোবাসা বিনিময়ের ধরণ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের জরিপে দেখা গেছে, থাইল্যান্ডের যুবক-যুবতীরা ১৪ ফেব্রুয়ারিকেই তাদের সতীত্ব [ভার্জিনিটি] খোয়ানোর 'পারফেক্ট' দিন হিসেবে বেছে নেয়। তাই দিনটি ঘিরে উদ্বেগ বেড়ে যায় অভিভাবকদের পাশাপাশি শহরটির কর্তৃপক্ষেরও।
এ থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবেই ব্যাংকক সিটি কর্তৃপক্ষ তরুণ-তরুণীদের ওই অনুরোধ জানিয়েছেন। পিরাপং সেইচুয়া নামে শহর কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, 'যদি তরুণ-তরুণীরা সত্যিই একে অপরকে ভালোবেসে থাকে, তাহলে পিঞ্জরবন্দি মাছ ও পাখিকে মুক্ত করে দেওয়া অথবা মন্দিরে যাওয়াই তাদের জন্য অধিকতর ভালো হবে।'
খাঁচাবন্দি পাখিকে মুক্ত করে দেওয়া বৌদ্ধধর্মের একটি শুভ রিচ্যুয়াল। এটিকে থাইল্যান্ড ও এশিয়ার অন্যত্র ধর্মবিশ্বাসীরা তাদের মেধা বৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবেই দেখে থাকে। তরুণ-তরুণীদের উদ্দেশ্যে পিরাপং আরো বলেন, 'মুক্ত কিছুতে মনকে নিয়োগ করাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর হবে। তোমাদের বয়সের তুলনায় বেমানান এমন কিছুতে নিজেদেরকে লিপ্ত করো না।'
তবে নৈতিক শিক্ষা বা নির্দেশনা থাইল্যান্ডের তরুণ-তরুণীদেরকে যৌন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার ক্ষেত্রে খুব একটা কাজে দিবে বলে মনে হয় না। কারণ তরুণ-তরুণীরা খোদ নিজেরাই দিনটি উদযাপনে যৌনতায় লিপ্ত থাকার পক্ষে। খেমাফাত সানটং নামে ২১ বছর বয়সী এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, 'যৌন সম্পর্ককে নিষিদ্ধ করা যাবে বলে আমার মনে হয় না। আমি বুঝাতে চাইছি হ্যাঁ, কিছু কিছু পাবলিক স্পটে হয়তো তা করা যাবে তবে কাউকে সম্পূর্ণরূপে তা করা থেকে বিরত রাখা অসম্ভব।'
বিডি-প্রতিদিন/ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/শরীফ