শ্রীলংকার এক ৭৫ বছরের হাতিপ্রেমিক বৃদ্ধ তার নিজের মালিকানাধীন শেষ ধানী জমিটুকু এক বৌদ্ধমন্দিরকে দান করেছেন। তবে শর্ত সাপেক্ষে। তা হলো ওই আধা একর জমির উৎপাদিত ধান যেন শুধু হাতির খাওয়ার জন্যই রেখে দেয়া হয়। ওই মন্দিরের হাতি, বা বন্য হাতি সবার জন্যই এই জমি উন্মুক্ত থাকবে।
যদিও হেরাথ মুদিয়ানসেলাগে ধর্মসেনা নামে এই দরিদ্র কৃষকের আট সন্তানের একটি বন্য হাতির আক্রমণেই মারা গেছে - তবু হাতির জন্য তার ভালোবাসা কমেনি।
মধ্য শ্রীলংকার গেদিগাসওয়ালানা গ্রামে এই জমির দলিল 'হস্তান্তর' হয়। অনুষ্ঠানে হাজির ছিল সেই বৌদ্ধমন্দিরের দুটি হাতি, এবং অনুষ্ঠানের পর তাদেরকে মি. ধর্মসেনার জমির ধান খেতে দেয়া হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, সে সময় উপস্থিত অনেক চাষীর চোখে তিনি কান্নার জল দেখেছেন। ওই এলাকায় এধরণের ঘটনা বিরল। কারণ যদিও স্থানীয় বৌদ্ধ সংস্কৃতিতে হাতির জন্য একটা বিশেষ সদয় অনুভূতি লোকের মনে কাজ করে। কিন্তু তারপরও মানুষ ও হাতির বৈরিতা খুবই সাধারণ ঘটনা।
অনেক চাষীকেই নিয়মিত হাতি তাড়াতে হয়, তাদের ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে। তার ওপর ধর্মসেনার আট সন্তানের মধ্যে একজন, ২০ বছরের পুত্র সন্তান বন্য হাতির আক্রমণেই মারা যায়। হাতিটি তার ছেলেকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে জঙ্গলের মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। পরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। কিন্তু মানসিক আঘাতের পরেও ধর্মসেনা হাতির প্রতি ভালোবাসা হারাননি। তার কথা, বুদ্ধের শিক্ষাই হলো শত্রুকেও ভালোবাসতে হবে। বিবিসি বাংলা।
বিডি-প্রতিদিন/ ১১ মার্চ, ২০১৫/ রশিদা