চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা পাহাড়ী জনগোষ্ঠির বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু প্রাণের উৎসবে পাহাড়ি-বাঙ্গালির সম্মিলনে এক মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে পাহাড়ের জনপদ। প্রত্যেকটি পাহাড়ি জনপদে এখন চলছে উৎসব। চাকমা সম্প্রদায় বিজুকে ঘিরে নানা ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নাচ-গান, গাঙ্গুলী, পুতিঁ, চাকমা নাটকসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে বিজু পালন করছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক সুসময় চাকমা জানান, বৈসু, সাংগ্রাই, বিজুর ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য আমরা ৩ দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করেছি। এতে পাহাড়ের হারিয়ে যাওয়া বেইন বুননসহ (কোমর তাঁত) পাঁজন তৈরীর প্রতিযোগিতা দিয়েছি। সূর্য শিখা ক্লাব, ইয়ং স্টার ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন পাড়া-গ্রামে বিজুর কর্মসূচি পালনে ব্যস্ত সময় পার করছে। মারমারা সাংগ্রাই পালনে খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়া বটমূলে সপ্তাহব্যাপী নিজেদের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা নিয়ে কর্মসূচি শুরু করেছে। এতে রয়েছে ‘দ’ খেলা, জলকেলি প্রতিযোগিতা। মারমা সংগঠনের সভাপতি চাইথোঅং মারমা জানান, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব পালনে আমরা নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছি।
ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের উদ্যোগে চলছে বৈসু পালনের উৎসব। আজ শুক্রবার বাংলাদেশ ত্রিপুরা সংসদের উদ্যোগে এক বিশাল বর্ণ্যঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। খাাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নেতৃত্বে শোভা যাত্রাটি নেচে-গেয়ে পুরো শহরকে মাতিয়ে তোলে। খাগড়াছড়ির পার্বত্য জেলা পরিষদের নব নিযুক্ত চেয়ারম্যান কংজ্যরি চৌধুরী জানান, পাহাড়ে শান্তি সম্প্রীতিকে আরো দৃঢ় করার লক্ষ্যে জেলা পরিষদ ৭ দিনব্যাপী মেলার আয়েজন করেছে।
শনিবার এ মেলা খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হবে। পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে জেলা প্রসাশনও নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, পাহাড়ে বৈসাবির আনন্দে সকলকে একত্রিত করার লক্ষ্যে আমরাও র্যালিসহ নানা আয়োজন করেছি। খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল স.ম মাহবুব-উল-আলম আজ পাহাড়ের খ্যাতনামা শিল্পী ক্রাঞোরী মারমার অডিও-ভিডিও আ্যাালবাম বৈশাখের সুর'র মোড়ক উন্মোচন করেন। খাগড়াপুরে ইয়ামুক নৃত্য গোষ্ঠীর উদ্যোগে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের গড়ায়া নৃত্য উৎসবের আয়োজন চলছে। কমিটির আহবায়ক যুগান্তর ত্রিপুরা জানান, তৃতীয় বছরের ন্যায় আগামী ১৩ এপ্রিল এ উৎসব শুরু হবে। জেলা পরিষদের মেলা কমিটির আহবায়ক পরিষদ সদস্য মো. জাহেদুল আলম জানান, ৭দিন ব্যাপী তাদের আয়োজনে পাহাড়ি-বাঙ্গালি সকল সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি এখানে তুলে ধরা হবে। সব মিলে পাহাড়ের জনপদ এখন পাহাড়ি-বাঙ্গালির সম্মিলনের উৎসবে মাতোয়ারা।
বিডি-প্রতিদিন/ ১০ এপ্রিল ২০১৫/শরীফ