এক দেশ থেকে অন্য দেশে মানুষ পাচার হওয়ার কথা প্রায় শোনা যায়। জানা যায়, তাদের দিয়ে পরবর্তীতে আপত্তিকর সব কাজ করানোর কথাও। যা আরও একবার স্পষ্ট হলো সম্প্রতি প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে।
ব্রিটেনে এই মুহূর্তে যতো সংখ্যক নারী ও শিশু যৌন ব্যবসায় লিপ্ত রয়েছেন তাদের অধিকাংশই বাইরের দেশের। আবার এদের মধ্যে বিরাট একটা অংশ পাচারের শিকার হয়েছেন এবং পরবর্তীতে তাদেরকে যৌন পেশায় যুক্ত হতে বাধ্য করা হয়েছে।
সম্প্রতি দেশটির জাতীয় অপরাধ সংস্থার এক পরিসংখ্যানে এমনটা তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে এই অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে দাবি সংস্থাটির।
এমনই একটি ভিনদেশী পাচারের পর যৌন পেশায় যুক্ত হওয়ার সংবাদ প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা বিবিসি। প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, এরকমই একজন মহিলা ওপ। যাকে নাইজেরিয়া থেকে ব্রিটেনে করা হয়েছে বলে দাবি সংস্থার।
দশ বছর আগে, ২০০৫ সালে এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়। যিনি তাঁকে বিদেশে ভালো চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মূলত ব্রিটেনে তাকে শিশুদের দেখভালের কাজ করতে হবে বলেই বোঝানো হয়েছিল। নৌকায় করে চারদিন পর স্পেনের মাদ্রিদে এসে পৌঁছান তিনি। মাদ্রিদে পৌঁছতেই তাঁকে রাস্তায় কাজ খুঁজে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওপ সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছে, রাস্তায় কাজ করতে গিয়ে ধর্ষণ হতে হয়। এরপরেই পাচারকারীরা তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়ে দেয় বলে। ওপ আরও জানিয়েছেন, “আমার অবস্থা ছিল একসময় একজন দাসীর মতো।” ধর্ষণের পর পাচারকারীরা তাকে যৌন ব্যবসায় জোর করে নামতে বাধ্য করে। কিন্তু হাল ছাড়তে রাজি ছিল না সে!
একদিন তাকে যখন খাবার দাবার কিনতে বাজারে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, সেদিন তিনি রাস্তায় একটি হারিয়ে যাওয়া মানিব্যাগ খুঁজে পান। সেখানে মানিব্যাগের মালিকের নাম ও পরিচয় লেখা থাকলেও, সেখান থেকে কিছু টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওপ।
কিন্তু লন্ডনের কিংস ক্রস সেন্ট প্যানক্রাস স্টেশনে থেকে একটি ট্রেনে উঠতেই ইমিগ্রেশনের এক আধিকারিক তাকে গ্রেফতার করে। অবশেষে তার ঠিকানা হয় জেল। যদিও পরে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তার সাহায্যে এগিয়ে আসে। পরে ওপ যে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছে তা প্রমাণিত হয় আদালতে। অবশেষে ওপ ছাড়া পেলেও অস্বস্তি সঙ্কটে সে।
বিডি-প্রতিদিন/১২ এপ্রিল, ২০১৫/মাহবুব