যেখানে সেখানে বা ফুটপাতে মূত্রত্যাগ যেন স্বাভাবিক ঘটনা। আর এজন্য চলাফেরায় বিড়ম্বনাও কম পোহাতে হয় না। তাই ভ্রাম্যমান টয়লেট ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ানো ও ভোগান্তি কমাতে এবার বিকল্প চিন্তা করা হয়েছে। দেয়ালে আরবি লেখা থাকলে তা আর সম্ভব নয়।
এমনই চিত্র দেখা গেছে রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও এলাকায়। সেখানে এক দেয়ালে আরবির নীচে ইংরেজীতে টয়লেট লিখে তীর চিহ্ন দেয়া আছে। আরবি নির্দেশনায় আসলে বোঝানো হয়েছে টয়লেট কোন দিকে। এভাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আরবি ভাষায় দেয়ালে লিখে যত্রতত্র মূত্রত্যাগ বন্ধ করার একটি প্রচারণা চলছে। এই কাজটির সঙ্গে যারা জড়িত তারা বলেছেন, অভিনব এই কাজটির মাধ্যমে ইতোমধ্যেই তারা কিছু ইতিবাচক সাড়াও পেয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওচিত্রে ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমানকে এভাবেই বলতে শোনা যায়, আরবিতে দেয়াললিখন দিয়ে যত্রতত্র মূত্রত্যাগ বন্ধের একটি উদ্যোগের কথা---। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব চৌধুরী মোহাম্মদ বাবুল হাসান বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে কোন অর্থায়ন করছে না। তবে ধর্মমন্ত্রী এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনকে পরামর্শ দিয়েছেন। তেজগাঁও শিল্প এলাকার ফুটপাতের একপাশে রাস্তায় রিকশার স্ট্যান্ড এবং অপর পাশে দেয়ালে লাল অক্ষরে আরবি লেখা। যার নীচে একটি তীর চিহ্ন দিয়ে লেখা রয়েছে টয়লেট।
এদিকে আরবি হরফে সতর্কবানী দিয়ে হয়তো প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগ কিছুটা ঠেকানো গেছে। তবে এর সমালোচনাও করছেন কেউ কেউ। ওই দেয়াল লিখনের তীরচিহ্ন ধরে কিছুটা সামনে এগুলেই একটি মসজিদ এবং সেখানে শৌচাগারও রয়েছে। মসজিদটির ইমাম মোহাম্মদ ফজলুল করিম বলছেন, তিনি লেখাটি দেখেছেন, কিন্তু তিনি মনে করেন আরবি ভাষাটি এভাবে ব্যবহার না করাই ভালো। ব্যতিক্রমধর্মী এই উদ্যোগটি নিয়ে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও অনেকে সমালোচনা করছেন, এটিকে সাধারণ মানুষের সাথে একধরণের প্রতারণাও বলছেন কেউ কেউ। তবে সচিব বলেছেন, এ কাজটি একটি ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই করা হয়েছে। কিন্তু ঢাকায় শৌচাগারেরও অভাব রয়েছে এবং মসজিদের শৌচাগার ব্যবহারের কথা বলা হলেও পানি সংকট এবং নিরাপত্তার কারণে সব মসজিদের শৌচাগারও সবসময় খোলা থাকে না।
এ কাজটি প্রাথমিকভাবে শুরু করেছিল বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘গ্রে’। সংস্থাটির একজন কর্মকমর্তা নুরুর রহমান বলছিলেন, সমস্যা কিছুটা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর সমাধান সম্ভব। অভিনব এ উদ্যোগের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, এটি যদি ছড়িয়ে দেওয়া যায় তবে হয়তো প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগের ঘটনা আরো অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সেটি হয়তো সময়ই বলে দেবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১০মে, ২০১৫/ রোকেয়া।