১৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:৪৫

অরণ্য বৈচিত্র্য হারাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

অরণ্য বৈচিত্র্য হারাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

সবুজ শ্যামল প্রকৃতি ও বাহারি ফুলের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। যেদিকে নজর যায়, বাহারি রাঙা ফুল গাছ, সবুজ অরণ্য, দালান, গাড়ি আর নানান নয়নাভিরাম স্থাপনা। এখানেই জন্মেছে হাজারো বৈচিত্র্যপূর্ণ অপরূপ নিদর্শনের বৃক্ষ, ফুল-ফল ও ঔষধি গাছ। সেখানে আজ চারপাশের সকল প্রকৃতিকে নীরব করে শিক্ষার্থীদের প্রিয় ঝাউগাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে।

রোদের মাত্রাতিরিক্ত তাপে আর যথোপযুক্ত পরিচর্যার ও পানি শূন্যতায় ঝাউগাছগুলো এভাবেই মারা যাচ্ছে বলে মনে করেন অনেক বৃক্ষপ্রিয় শিক্ষার্থীরা। তিন যুগের বেশি অতিবাহিত বয়স হওয়ায় ধীরে ধীরে গাছগুলোর এই মৃত্যু বলে দাবী করছেন প্রতিষ্ঠানটির বৃক্ষ রোপণ কমিটি ও এসেস্ট অফিস। 

জানা যায়, মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রতিবেদন সংগ্রহকালে এই তথ্য উঠে আসে। ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সৌন্দর্যের ও ভালোলাগা ছিল ডায়না চত্বরের ঝাউগাছগুলো ও প্রধান ফটকের কৃষ্ণচূড়া গাছ। মহামারীর প্রথম ধাপে পর্যাপ্ত পরিচর্যার অভাবে চিরতরে কৃষ্ণচূড়া গাছটি মারা গেছে। অন্যদিকে তখনও বেঁচে ছিল এই নয়নাভিরাম ঝাউগাছগুলো। মার্চ থেকেই মরীচিকাময় হয়ে পরেছে ঝাউগাছগুলো। এপ্রিলের মধ্যবর্তিতা সময়ে চিরতরে হারিয়ে যায় সেই অপরূপ সৌন্দর্য। 

এই বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রানা আহম্মেদ অভি বলেন, হারিয়ে যাওয়া বৃক্ষগুলোর মরীচিকাময়তা দেখে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। প্রধান ফটকের পরে ডায়না চত্বরের ঝাউগাছগুলো শত শিক্ষার্থীর স্মৃতিময় আবেগ। গাছগুলোর ছায়াতলে বন্ধুদের আড্ডা হতো। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিয়াসীদের ছবি তোলার অন্যতম প্রিয় জায়গা ছিল ঝাউগাছগুলো। বৃক্ষরোপণ কমিটি ও এসেস্ট অফিসের সকলের কাছে আমার একটিমাত্র দাবী- বৃক্ষগুলো যত্নের প্রতি খেয়াল রেখে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা। অন্যদিকে যেগুলো মৃত্যু অবধারিত সেখানে একাধিক নতুন বৃক্ষ রোপণ করে পরিচর্যা করা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃক্ষরোপণ কমিটির সদস্য মঞ্জুর জানান, বৃক্ষগুলো প্রায় ৩৫ বছর আগে রোপণ করা হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে আরও অনেক বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে যেগুলো এখনো বেঁচে আছে। তিনি আরও বলেন, উপরমহলকে আমরা বরাবর এই বিষয়ে জানাচ্ছি। ইতোপূর্বে প্রধান ফটকের কৃষ্ণচূড়া গাছ এভাবে মারা গেলে আমরা একটি বৃক্ষের স্থানে তিনটি চারা রোপণ করেছি। এভাবে এসেস্ট অফিস ও বৃক্ষরোপণ কমিটির অনুমতি পেলে ঝাউগাছগুলোর স্থানে একাধিক চারা রোপণ করা হবে। 

এসেস্ট অফিসের পরিচালক টিপু সুলতান বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জানান, গাছগুলো যেহেতু মরীচিকা রঙ ধারণ করে মারা যাচ্ছে। আমরা অচিরেই নতুন চারা লাগাবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রান্তে সবুজ অরণ্যের যে নয়নাভিরাম বৈচিত্র্যতা দ্রুত আবারও শিক্ষার্থীরা দেখতে পারবেন।  

ঝাউগাছের চারা রোপণ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, চারা রোপণের পূর্ব মুহূর্তে আমরা গাছগুলো কর্তন করবো। যেহেতু চারা রোপণ করতে কিছুদিন দেরি হবে যেহেতু ঈদ পরবর্তী সময় পর্যন্ত মারা যাওয়া ঝাউগাছগুলো এভাবেই থাকবে। এতে শিক্ষার্থীদের মতো আমরাও কষ্ট পেয়েছি।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর