বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
এডিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন

উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন বড় বিনিয়োগ

উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য বড় আকারের বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মনে করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সরকারি প্রাথমিক হিসাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে সংস্থাটি বলেছে, সদ্যবিদায়ী ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট দেশজ আয়ের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) হতে পারে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। এ সময়কালে কৃষি খাতের উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলেও বিগত সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতায় সরবরাহব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় শিল্প উৎপাদন ধীর হয়ে পড়েছে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে গতকাল হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে এডিবি।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরের (২০১৪-১৫) বাজেট নিয়ে একটি বিশ্লেষণও দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হতে পারে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সঙ্গে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে দক্ষতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ২০০১ সালের পর প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এতে আরও বলা হয়- সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা দক্ষতার সঙ্গেই চলছে। রাজস্বনীতির সঙ্গে একটি সতর্ক মুদ্রানীতির ফলে গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতি নিম্নগতি রয়েছে। বাজেটে ভর্তুকি কমে আসাসহ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির পূর্ণাঙ্গ ব্যয় না হওয়ার ফলে বাজেটের ঘাটতির আকার লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে- দ্রুত দারিদ্র্য বিমোচন করতে হলে মধ্যমেয়াদে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। ২০১৪ সাল নাগাদ বিনিয়োগ বাড়াতে হবে জিডিপির ২৮.৭ ভাগে। সেই সঙ্গে প্রবৃদ্ধি হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। বিনিয়োগ বাড়িয়ে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। ব্যবসা শুরুর খরচ কমিয়ে বহির্বিশ্বে প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাড়াতে হবে। বিশেষ করে অগ্রাধিকার ছয় প্রকল্প যেমন গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা বহুমুখী সেতু, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উল্লেখযোগ্য।

চলতি অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিগত সময়ের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও লক্ষ্যমাত্রা থেকে কম হয়েছে। বড় আকারের বৈদেশিক সহায়তা অর্জনের ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। রাজস্ব আদায় ও বৈদেশিক সহায়তা কম হলে সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়বে, যা বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং মূল্যস্ফীতিও ঊধর্্বমুখী হতে পারে। পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান হলেও বাস্তবায়ন দক্ষতার ঘাটতির ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করে এডিবি।

সর্বশেষ খবর