সাধারণ মানুষের ঘাড়ে করের বোঝা চাপানো প্রস্তাবিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট দিয়ে সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বাজেটে সাধারণ মানুষের ঘাড়েই করের বোঝাটা বেশি চাপানো হয়েছে। আমাদের দেশের বাজেট সিস্টেমে ধনীরাই ধনী হয়। আর গরিবরা হয় হতদরিদ্র। এর ফলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখছেন, তা বাস্তবে সম্ভব নয়। এ ছাড়া দেশের বাজেটোরি সিস্টেমকে জাতীয় বাজেট না বলে বাৎসরিক অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশের দলিল বলাই ভালো বলে তিনি মনে করেন। গতকাল মহাখালীস্থ ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের আয়োজনে বাজেট-২০১৬-১৭ শীর্ষক এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থউপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের অ্যামিরিটাস অধ্যাপক হাফিজ গোলাম এ সিদ্দিক। আরও বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির উপদেষ্টা ও ডিন রহিম বি তালুকদার এবং সহযোগী অধ্যাপক রেজাউর রাজ্জাক। ড. সালেহউদ্দীন বলেন, শুধু এনবিআর নির্ভর বাজেট থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। অবশ্য এ বছর তো আর বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়। এজন্য ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে হবে বাজেটের ধরন বদলানোর। প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে শিক্ষা খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটা বেশ একটা ইতিবাচক দিক। তবে শুধুমাত্র জনসাধারণের ওপর কর না বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর অন্য উপায় খুঁজতে হবে। কেননা এ বাজেটে অনেক শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। সহজেই রাজস্ব আদায় বাড়াতে মোবাইল ফোনের সেবার ওপর কর বসিয়েছে সরকার। অথচ সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে সেগুলো উঠানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার। অথচ শুধু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) যে পাওনা রয়েছে তা দিয়ে বাজেটের অর্ধেক চাহিদা পূরণ করা যায়। তিনি আরও বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটা ভালো। কিন্তু এর ৯০ ভাগ অর্থই যাবে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন খাতে। এটা একটা শুভঙ্করের ফাঁকি। এসব ফাঁকফোকর বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন খাতে ব্যয় আরও কমানো যেত বলে তিনি মনে করেন। প্রস্তাবিত বাজেটের আরেকটি হলো খুব অবাক করার মতো বিষয় হলো— কালো টাকা সাদা করার ব্যবস্থা রাখা। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, তিনি ঘোষণা দিয়েছেন এ সরকার যতদিন থাকবে, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ততদিন থাকবে। এতে কালো টাকার মালিকরা আরও উৎসাহিত হবেন বলে তিনি মনে করেন। বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারকে আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। অর্থনৈতিক বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। এটা উদ্বেগের বিষয়। মূল প্রবন্ধে মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব আদায় লক্ষ্য অর্জনযোগ্য নয়। একদিকে অর্থমন্ত্রী বলছেন সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপাচ্ছেন। এটা সাংঘর্ষিক ব্যাপার। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও গ্রামীণ ও কৃষি খাতে বরাদ্দ কমিয়েছে সরকার। বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করাটাও অসম্ভব বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
শিরোনাম
- শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে রিয়াল
- টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭
- নয়জনের দল নিয়েই বায়ার্নকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পিএসজি
- মিশরে দুই মিনিবাসের সংঘর্ষে ৯ জন নিহত, আহত ১১
- তানভীরের জবাব: ক্যাপ্টেনের ভরসাই আত্মবিশ্বাসের চাবিকাঠি
- করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা কেনেথ কলি
- সকালের মধ্যে সাত জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
- ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে: আমিনুল
- ইমন-হৃদয়-তানভীরের ত্রয়ী দাপট কলম্বোতে
- শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ
- মান্না ছিলেন বাংলাদেশের জেমস বন্ড: জাহিদ হাসান
- জ্ঞানীরা পিআর সিস্টেমে নির্বাচন চায় : ফয়জুল করিম
- পাহাড়ি ফল ঐতিহ্যের অংশ : উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা
- পল্লী বিদ্যুতের সাব-যোনাল অফিস স্থানান্তরের প্রতিবাদে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ
- প্রবাসী ভাইয়ের লাশ আনতে গিয়ে প্রাণ গেল দুই ভাইয়ের
- নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : নার্গিস বেগম
- বিচার ও সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে : নাহিদ
- চট্টগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক দলের আনন্দ মিছিল
- উত্তাল বঙ্গোপসাগরে আশ্রয় নিল শত শত ট্রলার, চার বন্দরে সতর্কতা
- বিএনপি নামলে নির্বাচন পেছানোর সাহস কারো নেই : গয়েশ্বর
সমতাভিত্তিক সমাজ অসম্ভব এই বাজেটে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর