শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
বৈঠকে নেই বিএনপির কেউ

ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ ৬ ফেব্রুয়ারি, থাকছে না জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংলাপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যেসব রাজনৈতিক দল ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তাদেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সংলাপ হবে। তবে এতে জামায়াতে ইসলামী থাকবে না। প্রশ্নবিদ্ধ একাদশ জাতীয় নির্বাচন বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংলাপের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, অবস্থান কর্মসূচি পালনের কথাও বলেছে ঐক্যফ্রন্ট। এ ছাড়া নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলার প্রক্রিয়াও চলছে। ২০ জানুয়ারি ড. কামাল হোসেন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবেন। তিনি ফিরে আসার পর আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে গতকালের বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অংশ নেননি। এমনকি বিএনপির কোনো প্রতিনিধিও সেখানে ছিলেন না। বৈঠকে ড. কামাল হোসেন ছাড়াও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ দলের সিনিয়র নেতারা অংশ নেন। বৈঠক শেষে আ স ম আবদুর রব বলেন, ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে তাতে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল না। ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার পাশাপাশি পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে সংলাপের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়। জামায়াতে ইসলামী বাদে দেশের অপরাপর রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের এতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এই সংলাপকে ‘গণসম্মিলন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন, কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন ও গুলিস্তানের মহানগর নাট্য মঞ্চ- এই তিনটি ভেন্যুই প্রাথমিকভাবে ঠিক করে রেখেছে ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। অনুমতি মিললে এর যে কোনো একটিতে অনুষ্ঠিত হবে এই গণসম্মিলন বা ঐক্যফ্রন্টের জাতীয় সংলাপ। এর আগে আমন্ত্রণপত্র ছাপানো ও বিতরণের কাজ শুরু হবে। বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দেওয়া হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে আ স ম আবদুর রব বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতে ইসলামী ছিল না। এখনো নেই। জাতীয় সংলাপেও জামায়াত থাকছে না। এ ছাড়া নির্বাচনে যেসব দল অংশ নিয়েছে তাদের সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির গতকালের বৈঠকে বিএনপির কোনো নেতা আসেননি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দলগুলোর মধ্যে কোনো মনোমালিন্য আছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আ স ম রব বলেন, ঐক্যফ্রন্টে কোনো মনোমালিন্য নেই। একই প্রশ্নের জবাবে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসুস্থ। তাই আসতে পারেননি। কমিটির অন্য দুই সদস্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আসেননি কেন- এর জবাবে মণ্টু বলেন, তাদের আসার কথা ছিল। কিন্তু মামলা ও অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা আসতে পারেননি।

 প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন-পরবর্তী সংলাপের আগ্রহের বিষয়ে ঐক্যফ্রন্ট কী ভাবছে- এ প্রশ্নে মন্টু বলেন, ‘কোন প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের কথা বলছেন? ৩০ ডিসেম্বর তো কোনো নির্বাচনই হয়নি। আমরা তো সে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি।’

সর্বশেষ খবর