রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

১০ মার্চের সেই পতাকা উত্তোলন

শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর

১০ মার্চের সেই পতাকা উত্তোলন

১৯৭১ সালের ১ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখনকে নিয়ে গঠন করা হয় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ঢাকা থেকে জেলা ছাত্রলীগের কাছে নির্দেশ এলো- জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, জেলা সদরের কেন্দ্রীয় ও প্রধান কলেজের ভিপিকে  নিয়ে প্রত্যেক জেলায় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলতে হবে। ওই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা ১ মার্চ ফরিদপুরের স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করলাম। এই পরিষদের সদস্য হলাম আমি, সৈয়দ কবিরুল আলম মাও, সালাহউদ্দিন আহমেদ। এখানে চারজনের স্থলে তিনজন হওয়ার কারণ আমি একই সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি ছিলাম। ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে বঙ্গবন্ধুর অগ্নিঝড়া বক্তব্য শোনার পর ফরিদপুরের সর্বত্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল। ফরিদপুর জেলা স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ৮ মার্চ রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদে এক সভা করে সিদ্ধান্ত নিলাম, স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য এবং অম্বিকা ময়দানে বিশাল ছাত্র গণজমায়েত করতে হবে। ১০ মার্চ বিকালে অম্বিকা ময়দানে সমাবেশের কথা থাকলেও দুপুরের মধ্যেই অম্বিকা ময়দান জনতার স্রোতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। স্বাধীনতার স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে ফরিদপুর শহরের অলি-গলি, রাজপথ। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফরিদপুর শহরের ঐতিহাসিক এই অম্বিকা ময়দানে আমি শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করি এবং সমাবেশে আগ্নেয়াস্ত্র ফায়ার করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলার স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা ঘোষণা করি। এ দিনেই পাকিস্তানিদের নাম আমরা ফরিদপুরের মাটি থেকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলি। দিনটি ফরিদপুরবাসী দলমত নির্বিশেষে প্রতি বছর আমরা পালন করছি।

সর্বশেষ খবর