বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় গত  সোমবার বাংলাদেশের সর্বত্র ত্যাগের মহিমায় উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের নামাজ আদায় ও সামর্থ্যবানদের পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে পালন করা হয় মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব। তবে সবাই যখন ঈদ আনন্দে মশগুল তখন  ডেঙ্গু আক্রান্ত ও স্বজন হারানো অনেক পরিবারের ঈদ কেটেছে নিরানন্দ ও শোকাতুর পরিবেশে। ঈদের নামাজে ডেঙ্গু, বন্যাসহ দুর্যোগ-দুর্বিপাক থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর দরবারে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। হিজরি সনের জিলহজ মাসের দশম দিন ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশে এটি কোরবানির ঈদ নামেই পরিচিত। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগের মহিমায় এদিন পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মনের কলুষতাকে বিসর্জন দেওয়া ইসলামের শিক্ষা। রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতারাসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ সেখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের নিয়ে দুর্যোগ-দুর্বিপাক থেকে মুক্তি ও মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা, দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া ও মোনাজাত করেন। এরপর তারা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। রাজধানীতে দ্বিতীয় বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। এখানে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে এবার রাজধানীতে ৫৮২টি স্থানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবারের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। এটি ছিল এই ঈদগাহর ১৯২তম ঈদ জামাত। এদিকে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান দিনাজপুরের গোরা শহীদ ময়দানে প্রায় ৪ লাখ মুসল্লি নিয়ে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের।

ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় : এদিকে ঈদের দিন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদুল আজহা উপলক্ষে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। রাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, এ বছর হাওর অঞ্চলে আগাম বন্যা এবং দেশের কয়েকটি অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার কারণে অনেক মানুষ ভালোভাবে ঈদ করতে পারছে না। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ যাতে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, এবারের ঈদুল আজহা এমন একটা সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দেশব্যাপী ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। কোরবানির পর বর্জ্য যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলে মশার উপদ্রব আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই নিজ দায়িত্বে কোরবানির বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে ফেলতে হবে এবং বাসাবাড়ি ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি দেশবাসী ও প্রবাসী বাঙালি যারা আছেন সবাইকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমগ্র মুসলিম উম্মাকেও ঈদের শুভেচ্ছা জানান।

সর্বশেষ খবর