বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন না করলে ব্যবসা বন্ধ করে দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন না করলে ব্যবসা বন্ধ করে দিন

দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করতে না পারলে ব্যবসা বন্ধ করে দিন। ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংককে এটা করতেই হবে।’ গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে পারচেজ কমিটির সভা শেষে ব্রিফিংকালে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন খাতে আমাদের সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। পুঁজিবাজার, ব্যাংকিং খাত, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সব জায়গায় সংস্কার লাগবে। সব জায়গায় সংস্কার না আনলে আমরা অনেক জায়গায় পিছিয়ে থাকব। এখন যা আছে তা ২০-২৫ বছর আগের। এগুলোকে সংস্কার করতে হবে।’

২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃ তফসিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট কোনো বিষয় নয়। বিষয় হলো, এ টাকা দিয়ে তাদের (ঋণখেলাপিদের) নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা আমাদের সঙ্গে আছেন। তারা আমাদের প্রস্তাবে যে রাজি এটা এর মাধ্যমে প্রমাণিত হবে। একই সঙ্গে এটা বাস্তবায়নের জন্য তারা এগিয়ে আসবেন।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে উইন-উইন সিচুয়েশন হবে। তবে কাউকে আমরা জেলে পাঠাতে পারব না। এ মানসিকতা আমার নেই। আমি চেষ্টা করব টাকা আদায়ের। টাকা আদায় করবই। এটা জনগণের টাকা, রাষ্ট্রের টাকা। তাই টাকা আদায় হবেই।’ ঋণ পুনঃ তফসিলের সময় বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সময়টা একটু বাড়িয়ে দিয়েছি। এটা এমন কিছু না। সবাই হয়তো ধারণা করছে, ভালো-মন্দ (ভালো এবং খারাপ ঋণগ্রহীতা) সব এক হয়ে যাচ্ছে। ভালো-মন্দ এক হবে না। যারা ২ শতাংশ দিয়ে ঋণ পুনঃ তফসিল সুবিধা নিচ্ছেন, তারা এমনি এমনি ব্যবসা করতে পারবেন না। ব্যবসা করতে হলে তাদের কিছু ডিপোজিট দিতে হবে।

 ডিপোজিট ছাড়া তারা ব্যবসা করতে পারবেন না। তবে যারা ভালো ঋণগ্রহীতা, তাদের জন্য বাড়তি ডিপোজিটের প্রয়োজন হবে না। আমরা কোনো ব্যবসায়ীকেই জেলে পাঠাতে চাই না। ব্যাংক থেকে যারা টাকা নিয়েছেন, প্রত্যেককে টাকা ফেরত দিতে হবে। ব্যবসা করতে চাইলে আগের টাকা পরিশোধ করে তারপর আবার ব্যবসা শুরু করতে হবে।’ তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদ হার ১০ শতাংশের ওপর যাবে না। এটা ৯ দশমিক ৭৫-এর মতো হবে। ১০-এর কাছাকাছি হবে। এটা প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছেন, এটা বাস্তবায়িত হবে। এটা নির্বাচনী ইশতেহারে আছে। সুতরাং সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন হবেই। আর এটা বাস্তবায়নের জন্য উইন-উইন সিচুয়েশনে কাজ করা হবে। যাতে ব্যাংকও না ঠকে, সরকার না ঠকে, এনবিআর না ঠকে, দেশের মানুষ যাতে না ঠকে-সেভাবেই কাজ করা হবে।

অনেক ব্যাংক ঋণের সুদ এক অঙ্কে নামিয়ে আনেনি-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘কারা করেনি তা এখনো আমরা অফিশিয়ালি হাতে পাইনি। হাতে পেলে তাদের বলা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানবে না এমন কোনো ব্যাংকের অস্তিত্ব বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। যদি না মানে তাহলেও আমাদের হাতে রাস্তা আছে। আমরা বিভিন্ন আইন সংশোধন করছি। সুতরাং সরকারের সিদ্ধান্ত মানবে না এটা অসম্ভব (ইম্পসিবল)। এটা হতেই পারে না। তবে তাদের কথা শুনতে হবে। তাদেরও আমরা সাহায্য করব। মনিটরিং পলিসি দিয়ে আমরা তাদের সাহায্য করব।’ তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো ঋণের সুদ সিঙ্গেল ডিজিটে আনার জন্য যে চাহিদা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দিয়েছিল তা ইতিমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকে সিঙ্গে ডিজিটে এসেছেন, কেউ কেউ আসেননি। যারা আসেননি তাদের আসতে হবে। আর না হলে তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। এর মধ্যে কোনো আর ব্যবস্থা নেই (ইন বিটউইন)। সবার জন্য একই আইন। এ সময় তিনি জানান, শিগগিরই ব্যাংক খাতের জন্য কমিশন গঠন করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর