মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমাতে না পারলে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার কোনো দিনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হবে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় খেলাপি ঋণ কমানো সম্ভব হবে না। তিনি আরও বলেন, সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করতে না পারায় ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বাস্তবসম্মত কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতে মোটা দাগে দু-তিনটি সমস্যা রয়েছে। এর সমাধান না করতে পারলে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব নয়। এমনকি শুধু মুখে মুখে বললে হবে না যে, আমরা ব্যাংক খাতের উন্নয়ন করছি। এখানে সময়োপযোগী কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ আদায় না হওয়া, রাজনৈতিক বিবেচনায় যত্রতত্র ঋণ প্রদান এবং এ খাতের সুশাসনের অভাব- এ কটি সমস্যাই ব্যাংক খাতটাকে অস্থিতিশীল করে রেখেছে। অধিক খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোর নগদ অর্থের সংকটের পাশাপাশি স্থায়ী তহবিলেও সংকটের প্রভাব পড়ছে। ফলে নতুন করে ঋণ দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। আবার আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে অন্যত্র বিনিয়োগ করছে। এতে ব্যাংকগুলোর তহবিল সংকট বাড়ছে। ফলে একদিকে যেমন খেলাপি ঋণ আদায় করতে না পারা অন্যদিকে নতুন করে আমানত সংগ্রহ করতে না পারায় ব্যাংকগুলো তাদের সুদহারও কমাতে পারছে না। এ ছাড়া দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা সুশাসনের যে ঘাটতি তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে এ খাতে গ্রাহকদের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে।

প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এ অবস্থায় সরকার এবং ব্যবসায়ীরা চাইলেও সিঙ্গেল ডিজিট সুদহারের সিদ্ধান্ত এ মুহূর্তে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এজন্য চাই কার্যকর উদ্যোগ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক। ফলে এদের কারোরই বিজনেসের ভলিউম অব টার্গেট বেশি নয়। এর ফলে ব্যাংকগুলোও রেভিনিউ টার্গেট নিয়ে শঙ্কায় থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে জুন-২০১৯ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আইএমএফের হিসাবে এ সংখ্যা ২ লাখ কোটি টাকার কম নয়। ফলে বিপুল পরিমাণ এই খেলাপি কমাতে না পারলে সামনের দিনগুলোয় ব্যাংক খাতের সংকট আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর