ইতালির রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণকারী কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমান থেকে ১২৫ বাংলাদেশিকে নামতে দেওয়া হয়নি। এই বাংলাদেশিদের বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের বিমানটি দোহা থেকে ইতালির ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণের পর থেকে পাঁচ নম্বর টার্মিনালে আটকে থাকে। পরে কাতার এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, এসব যাত্রীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
গতকাল ইতালির স্থানীয় গণমাধ্যম আইএল মেসেজারোর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে অন্য একটি ফ্লাইটের দুই ডজনের বেশি বাংলাদেশি আরোহীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় ইতালি।
কাতার এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমানটি ঢাকা থেকে রোমে আসেনি। যে কারণে বাঙালি যাত্রীদের বিমান থেকে নামতে দেওয়া উচিত। কাতার এয়ারওয়েজ ইতালির সরকার এবং ইন্যাকের বিমান পরিবহন সংক্রান্ত সব ধরনের বিধিবিধান সতর্কতার সঙ্গে অনুসরণ করছে। আইএল মেসেজারো বলেছে, ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কাতার এয়ারওয়েজের ওই বিমানের ১২৫ বাংলাদেশি আরোহী ইতালিতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি বিমানবন্দরে বিমানের ভিতর থেকেও তারা নামতে পারবেন না। তবে জরুরি মেডিকেল সেবার দরকার হলে বিমান থেকে নামার অনুমতি পাবেন তারা।
কাতার এয়ারওয়েজের ওই ফ্লাইটেই বাংলাদেশি যাত্রীদের রোমের স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় দোহায় ফেরত পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে বিমানটিতে থাকা অন্যান্য দেশের ৮০ যাত্রীর নামার অনুমতি মিলেছে। বিমানবন্দরে তাদের করোনার নমুনা পরীক্ষা শেষে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফ্লাইটটিতে কিছু ইতালীয় যাত্রী রয়েছেন। থাইল্যান্ড থেকে দোহা হয়ে ইতালি পৌঁছানো এমন একজন যাত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশি যাত্রীদের সঙ্গে কেন ভ্রমণ করছেন; সেটি পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন। ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে তার নমুনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই ইতালীয়। আরোহীদের মধ্যে বাংলাদেশি একজন নারী অসুস্থতা বোধ করায় স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তা চেয়েছিলেন। কিন্তু ইতালীয় কর্তৃপক্ষ ওই নারীকে দীর্ঘ যাত্রার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন, যা কভিড-১৯ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বলে জানিয়ে দেয়। ফ্লাইটটি ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিমান থেকে প্রত্যেকেই নামতে পারবেন না বলে পাইলট ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ ঘোষণার পর বাংলাদেশি যাত্রীরা তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেন। একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিমানটি ইতালির ফিউমিসিনো বিমানবন্দরের পাঁচ নম্বর টার্মিনালে আটকে ছিল।
১২৫ যাত্রীকে ফিরিয়ে দিল ইতালি : এদিকে সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে বাংলাদেশ থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটের ১২৫ জন যাত্রীকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি ইতালি। ইতালির রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে থাকা যাত্রীদের বিমান থেকে নামতে দেওয়া হয়নি। কাতার এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, এসব যাত্রীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনবে।
কাতার এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সরাসরি রোমে যায়নি। ঢাকা থেকে কিছু যাত্রী কাতারে ট্রানজিট হয়ে রোমে গেছে। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইট না হওয়ায় তারা বাংলাদেশি যাত্রীদের পরিবহন করেছে।
তবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের ফের ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাতার এয়ারওয়েজের স্টেশন ম্যানেজার দেবিন জান্নাত মল্লিক। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের জানা ছিল না যে বাংলাদেশ থেকে কোনো যাত্রী ইতালি নেওয়া যাবে না। যেহেতু দেশটির নিষেধাজ্ঞা আছে, তাই সেসব যাত্রীকে আমরা ফিরিয়ে আনব। নিষেধাজ্ঞা যতদিন থাকবে ততদিন আর বাংলাদেশ থেকে ইতালিগামী কোনো যাত্রী নেওয়া হবে না।
